চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে শুল্কায়ন না করে খালাস করা রোলস-রয়েস ব্র্যান্ডের একটি বিলাসবহুল গাড়ি ঢাকার বারিধারা থেকে জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করা এই গাড়িটির দাম ২৭ কোটি টাকা।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই গাড়ির সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ৬ হাজার ৭৫০। এ ধরনের গাড়িতে শুল্ককর দিতে হয় শুল্কায়িত মূল্যের আট গুণ। স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল ধরনের এ গাড়ি উৎপাদনের সাল ২০২১। মডেলের নাম কুলিনান এসইউভি।
কাস্টমসের নথি অনুযায়ী, গত ১৭ মে গাড়িটি যুক্তরাজ্যের ভারটেক্স অটো লিমিটেড থেকে আমদানি করে বাংলাদেশের অনন্ত গ্রুপ ও চীনা নাগরিকের যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জেড এন্ড জেড ইন্টিমেটস লিমিটেড।
আমদানি নথিতে ৬৭৫০ সিসির গাড়িটির দাম দেখানো হয়েছে ২ লাখ ডলার। যদিও রোলস-রয়েস এর ওয়েব সাইটে গাড়িটির দাম দেওয়া আছে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৮৫০ ডলার।
এ ব্যাপারে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জানায়, চট্টগ্রাম ইপিজেডের হংকং ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেড গাড়িটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করে। গত এপ্রিলে গাড়িটি আমদানির পর চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ (ইপিজেড) এলাকায় নেওয়া হয়। এরপর শুল্কায়নের জন্য কাগজপত্র দাখিল করা হয় কাস্টম হাউসে। তবে গত ১৭ মে শুল্কায়নের আগেই গাড়িটির প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ঢাকার বারিধারায় বাসায় নিয়ে আসা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক শামসুল আরেফিন খান গাড়িটি জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর প্রথমে চট্টগ্রাম ইপিজেডে অভিযান চালায়। এরপর নিশ্চিত হয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক শামসুল আরেফিন খানের নেতৃত্বে বারিধারায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বাসার গ্যারেজে অভিযান চালানো হয়। ৪ জুলাই ওই বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আমদানিকারক যে বিধিতে শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িটি আমদানি করেছেন, তাতে দুই হাজার সিলিন্ডার ক্যাপাসিটির গাড়িতে এ সুবিধা পাওয়ার কথা। তবে আমদানি করা গাড়ির বনেটে স্টিকার অনুযায়ী এটির সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ৬ হাজার ৭৫০। অর্থাৎ শুল্কমুক্ত সুবিধা না পেলে গাড়িটি আমদানি বাবদ ২৪ কোটি টাকা শুল্ককর দিতে হবে। বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে।
শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর আরও জানায়, আমদানিকারক বেআইনিভাবে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া না করেই গাড়িটি গ্যারেজে লুকিয়ে রেখে শুল্ক আইনের বিধান ভঙ্গ করেছেন। এ ক্ষেত্রে চোরাচালান হিসেবে গণ্য হওয়ার অপরাধ হয়েছে। জব্দ করা গাড়িটি ঢাকা কাস্টম হাউসের শুল্ক গুদামে জমা দেওয়া হয়েছে।