আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের সম্মেলন : ওবায়দুল কাদের

SHARE

আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আজ শনিবার (২ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সদস্য ফরমপূরণ ও নবায়নের লক্ষ্যে সদস্য সংগ্রহ বই বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সেই সঙ্গে ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোকেও সম্মেলন করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সম্মেলন আগামী ডিসেম্বর মাসে হওয়ার কথা। তিন বছর পর পর আমাদের সম্মেলন হয়, সেই হিসেবে আগামী ডিসেম্বরে আমাদের নির্ধারিত সময়। সেই সম্মেলনের প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতোমধ্যে সারা দেশে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নের সব পর্যায়ে সাংগঠনিক শাখাগুলোর কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সময়মতো এ সম্মেলনগুলো সম্পন্ন করবেন।’

দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা আওয়ামী লীগেই হয় বলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি দাবি করতে পারি, আওয়ামী লীগই এই দেশের একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, যেই প্রতিষ্ঠান তার অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক চর্চা সব সময়ই করে আসছে। বাধা, প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও আওয়ামী লীগ ঘরোয়া কার্যক্রম, সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।

জাতীয় সম্মেলনের অংশ হিসেবে প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ এবং সদস্য নবায়ন কাজে জোর দিয়ে কাদের বলেন, আগামী ২০২৩-২৪ ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই জাতীয় সংসদ এবং আমাদের পার্টির জাতীয় সম্মেলন এই দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই সময়ে আমাদের সারা বাংলাদেশে সদস্য সংগ্রহ শুরু করতে হবে এবং সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য নবায়ন কার্যক্রমকে আমি জোরদার কারার জন্য সব শাখাকে অনুরোধ করছি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশ আগামী জাতীয় সংসদ এবং জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ আরও সুসংগঠিত সুশ্ঙ্খৃল, আরও আধুনিক, আরও স্মার্টার হবে। এবং আগামী নির্বাচনে আমরা আরও স্মার্টার, আরও আধুনিক দল, সুসংগঠিত একটা দল নিয়ে আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অংশ নেবে।

এদিকে বিএনপির আন্দোলনের নেতা কে জানতে চেয়ে আওয়ামী লীগ জনগণকে বিভ্রান্ত করছে, দলটির নেতাদের এমন দাবি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, এটা তো জনগণেরই প্রশ্ন। দেশের মানুষ জানতে চায় বিএনপি কথায় কথায় যে আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের দিবা স্বপ্ন দেখে তাতে তাদের নেতৃত্ব দেবে কে? বিএনপি যাকে নেতা বলছে, সে তো দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়েছে। জনগণ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ফিরিয়ে আনতে কেন অভ্যুত্থান করবে? আমরা প্রকৃত সত্য তুলে ধরে জনগণকে বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত করেতে চেয়েছি।’

তিনি বলেন, জনগণ বুঝে গেছে বিএনপির গণঅভ্যুত্থানের ডাক দুরভিসন্ধিমূলক ফাঁকা আওয়াজ, যা মিথ্যাবাদী রাখাল বালকের শিশুতোষ গল্পের কাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়। তারা একেক সময় একেক কথা বলে। দেশে কি গণঅভ্যুত্থানের মতো পরিস্থিতি বিরাজমান আছে? জনগণ শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অর্জনে খুশি। গত ১৩ বছরে বিএনপি বহুবার ডাক দিয়ে সাড়া পায়নি। আন্দোলনের কোনো বস্তুগত পরিস্থিতি বাংলাদেশে কোথাও নেই। দল হিসেবে তাদের প্রস্তুতি আছে বললেও বাস্তবে নেই।

বিএনপি কখনো নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলে, কখনো নির্বাচনকালীন সরকারের কথা বলে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সর্বশেষ তাদের মাথায় জাতীয় সরকারের ভূত ঢুকেছে। বিএনপি কী চায়, তা নিজেরাই জানে না। তাদের বলব এদিক, ওদিক না ঘুরে বরং নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হয়নি। আন্দোলনও হয়নি, নির্বাচনে অংশ নিতেও ব্যর্থ হয়েছেন। বাকি সময়েও লাভ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

সময় ও স্রোত যেমন কারো জন্য অপেক্ষা করে না, তেমনি নির্বাচনও বিএনপির জন্য অপেক্ষা করবে না জানিয়ে কাদের বলেন, সংবিধান মতে যথাসময়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। এতে আপনাদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। পরিবর্তনের একমাত্র পথ নির্বাচন। নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশের ক্ষমতার মঞ্চের পরিবর্তনের কোনো স্বপ্ন দেখে লাভ নেই।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।