জমি দখলদারদের চক্র ভাঙতে হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী

SHARE

মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে আছে খাস জমি দখলদারদের চক্র। এটি ভাঙতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

বুধবার (২২ ডিসেম্বর) নগরীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে ‘চরের মানুষের জন্য ভূমি: সংস্কার ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সংলাপে এ কথা বলেন তিনি।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নানাভাবে চরের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। আমি হয়তো এমপি আছি খাস জমি দখল করছি, আমি কোনো এনজিও মালিক জমি দখল করছি, প্রফেসর আছি চরের খাস জমি দখল করছি। যারা এসব করে তারা অনেক শক্তিশালী। এরা মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে আছে। মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে বুঝিয়ে এসব খাস জমি উদ্ধার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এখন কিন্তু আমরা ঔপনিবেশিক আমলে বসবাস করছি না। একই চক্র হাজার হাজার বিঘা জমি দখল করবে এটা হতে পারে না।

ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও অর্থনীতিবিদ সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, চরের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দরকার। চরের জন্য যে তহবিল রয়েছে তা বাস্তবায়ন দরকার। চরের অনেক পরিবর্তন হচ্ছে। এসব চরের উন্নয়ন জরুরি। আমরা দেখেছি একটা চরে সাবমেরিনের ক্যাবল দিয়ে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। সরকারের এটা ভালো উদ্যোগ, সব চরে বিদ্যুৎ দেওয়া দরকার।

সংলাপ আয়োজনে সহায়তা করে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’। এতে সভাপতিত্ব করেন আতিউর রহমান। বক্তব্য দেন- পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবীর, কৃষি বিষয়ক সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য লুৎফুন্নেছা খান এবং আইন ও বিচারবিষয়ক সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শোয়েব সাজ্জাদ খান। সমাপণী বক্তব্য রাখেন সমুন্নয়ের সচিব শাহীন উল আলম। সংলাপ সঞ্চালনা করেন ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্সের সদস্য সচিব জাহিদ রহমান।

সংলাপে অংশগ্রহণকারী বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মোট ভূমির প্রায় ১০ শতাংশ চরভূমি। চরে যারা বসবাস করেন তাদের বেশির ভাগ কৃষিজীবী এবং মৎস্যজীবী। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে তারা বিরাট অবদান রেখে চলেছেন। কিন্তু চরে বসবাসরত বেশিরভাগ মানুষ স্থায়ী বাসিন্দা নন। অস্থায়ী হিসেবেই তারা পরিচিত। কারণ চরের বেশিরভাগ জমিতে বহুবিধ জটিলতার কারণে তাদের সত্ত্ব নেই। তাই বিভিন্ন চরে বেশিরভাগ মানুষ অস্থায়ীভিত্তিতে জমি লিজ নিয়ে থাকেন। বড় বড় চরের বেশিরভাগ জমির মালিকরা দৃশ্যমান নয়।

চরে বসবাসরত প্রান্তিক চাষিদের অধিকার নিশ্চিত করা গেলে আরও বেশি ফসল উৎপাদন করা সম্ভব বলে জানান বক্তারা।

তারা বলেন, বাংলাদেশে ৮ হাজার ৩১৫ বর্গকিলোমিটার চর ভূমিতে বসবাস করছেন প্রায় এক কোটি মানুষ। চরের জীবন মানের উন্নয়ন বিশেষ করে বিগত ১০-১২ বছরে আলাদা গতি পেয়েছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও এক্ষেত্রে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে।