সৌদিতে নারী কর্মীদের দায়দায়িত্ব রিক্রুটিং এজেন্সির

SHARE

এখন থেকে সৌদি আরবে বাংলাদেশি নারী কর্মীদের দেখভালের দায়িত্ব দুই দেশের নিয়োগকারী সংস্থার ওপর বর্তাবে। তবে তাদের সুরক্ষায় নজরদারি জোরদারে সরকারিভাবে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে নির্যাতিত হয়ে একের পর এক নারী কর্মীর দেশে ফেরার মধ্যে সম্প্রতি রিয়াদে যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে গতকাল সোমবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

রাজধানীর ইস্কাটন রোডে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা বলেন, প্রবাসে নারী কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি জানান, নারী কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গত ২৭ নভেম্বর রিয়াদে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সৌদি শ্রম ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে তৃতীয় জয়েন্ট টেকনিক্যাল কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. জাহিদ হোসেন। এ সময় যুগ্ম সচিব সারোয়ার আলমসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসস’র।

সচিব বলেন, বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ করে এমন নারী-পুরুষ শ্রমিকরা সৌদি আরবে কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়ে। এখন থেকে তাদের নিরাপত্তার জন্য দুই দেশ যৌথভাবে সহায়তা করবে। শ্রমিকরা তাদের কর্মস্থল পরিবর্তন করলে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে জানাতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, নারী কর্মীদের সুরক্ষার জন্য তাদের বিস্তারিত ঠিকানা সৌদি আরব ও বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সি এবং নিয়োগকর্তার পূর্ণ যোগাযোগের ঠিকানা এবং নারী কর্মীর নিয়োগকর্তা পরিবর্তন সংক্রান্ত তথ্যাদি নারী কর্মীর আগমনের তারিখ এবং নিয়োগকর্তার কাছে হস্তান্তরের তারিখ প্রত্যাবর্তনকারী গৃহকর্মীর এক্সিট সংক্রান্ত তথ্যাদি সন্নিবেশিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এরই মধ্যে নিয়োগকর্তা পরিবর্তন, নতুন চুক্তি, নবায়ন ও এক্সিট সংক্রান্ত তথ্যাদি ছাড়া অন্যান্য তথ্যাদি হালনাগাদ করা হয়েছে। অবশিষ্ট তথ্য হালনাগাদ করার কাজ চলছে। যেসব নারী শ্রমিক কাজ ত্যাগ করে পলাতক হয়েছে তাদের পুলিশ কোনোভাবেই নিয়োগকর্তার কাছে হস্তান্তর করবে না।

নারী কর্মী যত দিন কর্মরত থাকবে তত দিন তার দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ ও সৌদি রিক্রুটিং এজেন্সি বহন করবে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, যেসব নারী কর্মী প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় আছে তারা প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত তাদের আবাসন ও অন্যান্য দায়িত্ব রিক্রুটিং এজেন্সি বহন করবে।

নারী কর্মীরা কর্মকাল পূর্ণ করলে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট এজেন্সি বহন করবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস ও সৌদি আরব শ্রম মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবে। যদি নারী কর্মী মেয়াদ শেষে কাজ করতে চায় তাহলে অবশ্যই চুক্তি নবায়ন করতে হবে। এ নবায়ন বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক অনুমোদিত হবে।

চুক্তি নবায়নের পর সংশ্লিষ্ট এজেন্সি এসংক্রান্ত তথ্যাদি আপডেট করবে। কোনো বিপদগ্রস্ত নারী কর্মীর সুরক্ষার অভিযোগ উঠলে সৌদি আরব সরকার ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া ভিসা বাণিজ্য বন্ধের বিষয়ে আলোচনা হয়। অভিযোগ প্রমাণ হলে শাস্তি দেওয়া হবে। সৌদি শ্রম আদালতে মামলা করার পদ্ধতি আরো সহজ করার বিষয়ে আলোচনা হয় বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।