সাভারের ‘জঙ্গি আস্তানা’য় অভিযান সমাপ্ত

SHARE

সাভার সংবাদদাতা :  দফায় দফায় বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে ঢাকার সাভারে নির্মাণাধীন একটি ছয়তলা বাড়িতে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষ হয়েছে।  শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে অভিযান শেষ হয় বলে জানান ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আজিম।

তিনি জানান, নির্মাণাধীন এই ছয়তলা বাড়ির দোতলার ফ্ল্যাটে এ অভিযানে সাতটি গ্রেনেড, তিনটি সুইসাইড ভেস্ট, ল্যাপটপ, বোমা তৈরির সার্কিটসহ নানা মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।

এর আগে ঢাকার সাভারের মধ্যগ্যান্ডা এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটি থেকে দফায় দফায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আজ শনিবার দুপুর ১২টার পর থেকে অন্তত ৫টি বিস্ফোরণ ঘটে।  প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে ওই বাড়ির বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মাধ্যমে বাড়িটিতে পানি ছোড়া হয়। এ ছাড়া ওই বাড়িটির আশপাশ থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়। দুপুর সোয়া ১২টায় ওই বাড়িতে প্রথম ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। এর পর বেলা একটা ১০ মিনিট, একটা ২০ মিনিট, একটা ২৫ মিনিট ও বেলা দেড়টায় বিকট বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়।

এর আগে আজ শনিবার বেলা ১১ টার দিকে পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সেখানে পৌঁছানোর পর কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে অভিযান শুরু করে পুলিশ।

পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ কমিশনার (ডিসি)মবিনুল ইসলাম খান জানান, অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে জঙ্গিরা আগেভাগে সটকে পড়লেও সেখানে তারা রেখে গেছে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক।

এর আগে গতকাল রাত সোয়া নয়টার দিকে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট ও ঢাকা জেলা পুলিশ যৌথভাবে সাভারের মধ্যগ্যান্ডা এলাকার নির্মাণাধীন ছয়তলা একটি বাড়ি ঘিরে ফেলে। এর আগে নামাগ্যান্ডা এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ।

মধ্যগ্যান্ডা এলাকায় ঘিরে রাখা বাড়িটির দোতলা পর্যন্ত নির্মাণ শেষ হয়েছে। বাড়ির মালিক সৌদি আরবপ্রবাসী। সিরাজুল নামের এক কেয়ারটেকারের কাছ থেকে ওই লোকজন বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন।

এর আগে গতকাল বিকেল চারটার দিকে নামাগ্যান্ডা এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে সিটিটিসি ও ঢাকা জেলা পুলিশ যৌথভাবে একটি পাঁচতলা বাড়ি ঘিরে ফেলে। সাভার মডেল থানার সহকারী পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান বলেন, ওই বাড়ির দুটি ফ্ল্যাটের একটিতে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে থাকতেন মণির হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে ‘জঙ্গি’ সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। আরেক ফ্ল্যাটে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন অপর এক ‘জঙ্গি’। অভিযানের আগে মণির পালিয়ে গেলেও তাঁর স্ত্রী রিমু আক্তার দুই শিশুপুত্র ও এক মেয়েকে নিয়ে ফ্ল্যাটেই ছিলেন। তাদের আপাতত বাড়ির মালিকের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আজীম বলেন, নামাগ্যান্ডায় অভিযান শেষ করে মধ্যগ্যান্ডায় বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়।