অনেক জল্পনা কল্পনার পর বহুল প্রতীক্ষিত সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে বাহরাইন লেবার মার্কেট রেগুলেটরি অথরিটি (এলএমআরএ)। এর মধ্যে দিয়ে পূরণ হলো প্রবাসীদের বহুদিনের প্রাণের দাবি ।
এলএমআরএ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আউসামা আবদুল্লা আল আবছি সম্প্রতি এ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন ।
আগামী ১লা জুলাই থেকে শুরু হয়ে ৩১ শে ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত (ছয় মাসের জন্য) বলবৎ থাকবে এই সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ। এই সময়ের মধ্যে রানওয়ে (কাজে অনুপস্থিত বা কাজ থেকে পলাতক), ওভার স্টে (কাজ শেষে অতিরিক্ত সময় অবস্থান), রানওয়ে আফটার টারমিনেশন (কাজ শেষের পর পলাতক) এবং নন রিনিউড ওভারস্টেকারী (ভিসার মেয়াদ শেষ হবার পর রিনিউ না করে অতিরিক্ত সময় অবস্থান) প্রবাসী শ্রমিকরা এ সাধারণ ক্ষমার আওতায় পড়বেন ।
ফলে আগামী ১লা জুলাই থেকে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য এই অবৈধ শ্রমিকরা বৈধ হয়ে যে কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। এছাড়া কোন প্রকার ‘জরিমানা’ বা কালো তালিকায় (ব্লাক লিস্ট) অন্তর্ভুক্তি ছাড়াই বাহরাইন ত্যাগ করে স্বদেশে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন তারা।
যারা এই সময়ের মধ্যে বৈধ হয়ে বাহরাইন ত্যাগ করবেন,পরবর্তীতে কোন বাধা ছাড়াই তারা আবার বাহরাইনে প্রবেশ করতে পারবেন।
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্যের প্রয়োজনে এলএমআরএ এর কল সেন্টার-১৭৫০৬০৫৫ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে ।
এলএমআরএ‘র সিইও আউসামা আবদুল্লা বলেন আইনের দৃষ্টিতে যারা অবৈধ কোন জরিমানা অথবা আইনি জটিলতা ছাড়াই তাদের সংশোধনের জন্য আমরা এই সুযোগ দিচ্ছি।
আউসামা আবদুল্লা আল আবছি জোর দিয়ে বলেন, এই সেবা পেতে শ্রমিকদের কোন জরিমানা ফি বা অতিরিক্ত চার্জ দেওয়া লাগবে না। সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিতে নিয়োগকর্তা বা দালালকে টাকা দেয়া সম্পূর্ণ অবৈধ।
উল্লেখ্য, বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল কে এম মমিনুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এই সাধারণ ক্ষমার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
বাহরাইনে অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশিদের বৈধ করার জন্য, যারা দেশে ফেরত চলে যেতে চায় তাদের বৈধ ভাবে যেতে দেয়ার জন্য বাহরাইনের ক্রাউন প্রিন্স ,ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী , স্পিকার,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল শেখ রাশিদ বিন আবদুল্লা আল খালিফা,বাহরাইন লেবার মার্কেট রেগুলেটরি অথরিটির (এলএমআরএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আউসামা আবদুল্লা আল আবছির সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এদিকে সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা আসার সাথে সাথেই বাহরাইনে অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিকদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে ।
১০ বছর ধরে অবৈধভাবে থাকা চাঁদপুরের ছলিম উদ্দিন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বাহরাইন আসার পর মা বাবা উভয়কেই হারিয়েছি। এখন এ ঘোষণার পর প্রিয় স্ত্রী সন্তানদের মুখ দেখার আশায় প্রহর গুনছি।