বরিশালে সোমবার জাতীয় পার্টির মহানগর সম্মেলন ঘিরে দলের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।
এক পক্ষে আছেন মহানগর সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদের আহ্বায়ক কাউন্সিলর এ কে এম মর্তুজা আবেদীন এবং অন্য পক্ষে জেলার সাবেক সভাপতি মহসিন-উল ইসলাম হাবুল। দুই পক্ষের দাবি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি থাকবেন।
বরিশাল নগরের অশ্বিনীকুমার হলে সোমবার জাতীয় পার্টির মহানগর সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। একই দিনে জেলা জাতীয় পার্টি ওই জায়গায় সমাবেশ আহ্বান করেছে। কর্মসূচি সফল করতে সংবাদ সম্মেলনও করেছে দুই পক্ষ।
শনিবার সকাল থেকেই অশ্বিনীকুমার হল চত্বরে প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ করছে মহানগর জাতীয় পার্টি। তারা সম্মেলন উপলক্ষে ছাপানো নিমন্ত্রণপত্র বিলি করেছে। তাতে দলের প্রধান এইচ এম এরশাদ ছাড়াও মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম আছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তুতি পরিষদের সদস্যসচিব আলতাফ হোসেন জানান, জাতীয় পার্টির মহানগর সম্মেলনের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সে অনুযায়ী হল বুকিং এবং পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতিও নেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে এখনো কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি।
এদিকে জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নিয়ে সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া জাতীয় পার্টির সাবেক জেলা সভাপতি মহসিন-উল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক মীর জসিমউদ্দিন জানান, যারা জাতীয় পার্টির মহানগরের সম্মেলন করতে চাইছেন, তারা দলের অতি ক্ষুদ্র একটি অংশ। বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে ওই সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে।
তাদের দাবি, জাতীয় পার্টির নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে এবং তাদের না জানিয়ে সম্মেলন করা হচ্ছে। বিষয়টি দলের প্রধান জানেন না। এমনকি বরিশালের নেতা এবং জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার, সংসদ সদস্য রত্না আমিনসহ কাউকেই জানানো হয়নি।
তিনি জানান, তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পার্টির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮ জুন বরিশাল অশ্বিনীকুমার হল চত্বরে সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে। পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। যদি এই সমাবেশে কেউ বাধা দেয়, তাহলে তা প্রতিহত করা হবে।
এ ব্যাপারে মহানগর জাতীয় পার্টি মহানগর সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক এ কে এম মুরতজা আবেদীন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ অনুযায়ী সম্মেলন হচ্ছে। গত জানুয়ারি থেকে সম্মেলন করার জন্য তারিখ দেওয়া হয়। তাদের (মহসিন-উল ইসলাম হাবুলের) কারণে কয়েকবার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। তাঁরা পার্টিতে আছেন পদ-পদবির জন্য। তাদের হুমকিতে ভয় পাই না। সম্মেলনে বাধা দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে।’
বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার শৈবাল কান্তি চৌধুরী বলেন, জাতীয় পার্টির দুই পক্ষই সম্মেলন এবং সমাবেশ করার জন্য পৃথক আবেদন করেছে। কোনো পক্ষকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে যারা আগে আবেদন করেছেন তাদের বিষয়টা বিবেচনায় নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে—এমন কোনো কার্যক্রম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত বছরের ৫ জানুয়ারি জাতীয় পার্টি বরিশাল জেলা ও মহানগর কমিটি ভেঙে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় কমিটি।