রাজধানীর উত্তরায় প্রকাশ্যে দুজনকে কোপানোর ঘটনায় জড়িত পুরো চক্রকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করেছে বলে দাবি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। আজ বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. মোবারক হোসেন, রবি রায়, মো. আলফাজ মিয়া ওরফে শিশির, সজীব ও মেহেদী হাসান সাইফ।
ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন উত্তরা অঞ্চলের ডিসি রওনক জাহান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ওই দুজনকে স্বামী-স্ত্রী বলে দাবি করা হয়। গণমাধ্যমেও তা প্রচার করা হয়। তবে আহত দুজন স্বামী-স্ত্রী নন বলে দাবি করেছেন মেহবুল হাসানের স্ত্রী শম্পা বেগম।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মেহবুল হাসান আমার বৈধ স্বামী। নাসরিন আক্তার ইপ্তির সঙ্গে তাদের স্বামী-স্ত্রীর কোনো সম্পর্ক নেই। এটি জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা।’ তিনি দাবি করেন, বিয়েসংক্রান্ত প্রমাণাদিও তার কাছে রয়েছে।
ওই দিন যা ঘটেছিল
পুলিশ জানায়, ওই রাতে মেহবুল হাসান ও নাসরিন আক্তার ইপ্তি উত্তরা পশ্চিম থানাধীন আমির কমপ্লেক্স থেকে কেনাকাটা করে বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় ৭ নম্বর সেক্টরের ওই স্থানে তিন ব্যক্তি দুটি মোটরসাইকেল নিয়ে বিকট শব্দ করে এলোমেলোভাবে চালিয়ে যাওয়ার সময় একটি মোটরসাইকেল সামনে থাকা একটি রিকশাকে ধাক্কা দেয়। রিকশাটিতে ৪ বছরের একটি শিশু তার মায়ের সাথে ছিল। শিশুটির বাবা রিকশা থেকে নেমে মোটরসাইকেলচালক গ্রেপ্তার আসামি মো. মোবারক হোসেনের সাথে বাগবিতণ্ডা শুরু করেন। ওই সময় রিকশার পেছনে থাকা ভুক্তভোগী দুজন তাদের ঝামেলা করতে নিষেধ করেন।
সে সময় রিকশার যাত্রীরা চলে যান। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলে থাকা তিনজন মেহবুল হাসানের সাথে তর্ক শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করেন।
এ সময় তারা বলতে থাকেন‘ ‘আমাদের চিনিস? আমরা কে?’। সে সময় ভিকটিমরা আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় আক্রমণকারী একজনকে ধরে ফেলে ও তার মোটরসাইকেল আটক করেন। এ সময় ফোন করে তিনি তার আরো কয়েকজন সহযোগীকে ডেকে নিয়ে আসেন। তারা দেশীয় অস্ত্র রামদাসহ ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত জনসাধারণের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে রামদা দিয়ে মেহবুল হাসানকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন।
নাসরিন আক্তার ইপ্তি ঘটনার সময় মেহেবুলকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা তাকেও রামদা দিয়ে আঘাত করে। এতে তারা বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। খবর পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের টহল টিম দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনগণের সহায়তায় মোবারক হোসেন ও রবি রায়কে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, আহত দুজনই বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।