‘বিচার বিভাগ অকেজো হয়ে যাচ্ছে, এটা সরকারকে জানাবেন’

SHARE

২৪আওয়ার রিপোর্ট :আইন মন্ত্রণালয়ের অসহযোগিতার কারণে বিচার বিভাগ অকেজো হয়ে যাচ্ছে, সমাধানে বিষয়টি সরকারকে জানানোর জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেছেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা।

আজ রোববার ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর শুনানির সময় তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের উদ্দেশে একথা বলেন।

একই সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে হাইকোর্টের রায় ২ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেন প্রধান বিচারপতির নেত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ। এ সময়ের মধ্যে রায়ের কপি পেলে নিয়মিত লিভ টু আপিল করারও নির্দেশ দেন আদালত।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

দিনের শুরুতে আদালতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন উপস্থাপন করেন তিনি। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, দরখাস্তে কী দেখাতে চেয়েছেন?

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মোবাইল কোর্ট চার দিন বন্ধ ছিল। এর মধ্যে দিনাজপুরে ৩৭টি বাল্যবিয়ে হয়েছে।

তখন আদালত বলেন, আপনি কি প্যারালাল কোর্ট চান?

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, না। ইমিডিয়েটলি ইফেক্টের জন্য। কোনো অপরাধ দমনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থার জন্য এটা।

তখন আদালত বলেন, মোবাইল কোর্ট করে শাস্তি দেবেন। আবার তার বিচার করবেন। এটা কোন বিধানে করবেন?

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পুরো মামলাটির শুনানি গ্রহণ করেন।

তখন আদালত বলেন, আমরা প্রকাশ্যে আদালতে অনেক কিছু বলি। এটাতে অনেক অপব্যাখ্যা হচ্ছে। বিচার বিভাগ সরকারের বিপক্ষে নয়। বিচার বিভাগ সব সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে রায় দেন। আইন মন্ত্রণালয়ের অসহযোগিতার কারণে বিচার বিভাগ অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এটা আপনি সরকারকে জানাবেন, সমাধানের জন্য।

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এভাবে বললে এটা কি সলভ (সমাধান) হবে? এগুলো বললে সংবাদপত্রে বড় বড় অক্ষরে হেডলাইন হবে।

আদালত বলেন, আপনাকে জানিয়ে দিলাম সমাধান করার জন্য।

তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সল্যুশন তো হচ্ছে না।

এর আগে গত ১১ মে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা-সংক্রান্ত আইনের কয়েকটি ধারা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

হাইকোর্টের সেই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ মে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে জরুরি বিচারিক বিধান-সংক্রান্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় ১৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন চেম্বার আদালত।

এরপর মামলাটি কার্যতালিকায় এলে আদালত স্থগিতাদেশের মেয়াদ ২ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর আদেশ দেন।