বাংলা দখলের ডাক দিলেন অমিত শাহ

SHARE

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজ রবিবার কলকাতায় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমর্থনে সভা করতে এসেছেন এবং সেখান থেকেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গে দুই তৃতীয়াংশ আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসবে।

এ সময় মমতার উদ্দেশে তিনি বলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে দিদি বলেছিলেন বিজেপি কিছুই পাবে না। কিন্তু বাংলার ৪২টি আসনের মধ্যে আঠারোটি আমরা পেয়েছি। এবার বিধানসভা দখল করব দুই-তৃতীয়াংশ আসন পেয়ে।

কাশ্মীরে ৩৭০ ধারার বিলোপ নিয়ে অনেক কথা বলেন শাহ। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে দিল্লির সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে কোনো কথা বলেননি। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে ঘিরে হিংসার আগুনে রক্তাক্ত হয়েছে দেশের রাজধানী এবং ৪২ জন মারা গেছেন আর আড়াই শর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। সিএএ-র প্রতিবাদে বিক্ষোভের ছবি দেখা গিয়েছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও।

কিন্তু সেই বিক্ষোভ এবং তা নিয়ে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে মুখ না খুলে শাহ সিএএবিরোধী আন্দোলনে বাংলায় যে হিংসা ছড়িয়েছিল তা নিয়ে মমতাকে আক্রমণ করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর মদতেই এই হিংসা। আমি মমতা দিদিকে প্রশ্ন করতে চাই, আপনি কেন উদ্বাস্তুদের আবেগে আঘাত হানছেন? আপনি শুধু অনুপ্রবেশকারীদের স্বার্থ দেখেন। উদ্বাস্তুরা ভীত ও অবাঞ্ছিত। আমাদের প্রত্দেবেশী দেশ থেকে যে সব হিন্দুরা ধর্ষিত হয়ে, সব হারিয়ে এদেশের শরণে এসেছেন, তারা কি নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য না?

সিএএবিরোধীদের সতর্ক করে শাহ আরো বলেন, সিএএতে কোনো মুসলিম নাগরিকের নাগরিকত্ব যাবে না। মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির কারণে। আমি আবার বলছি আমরা সারা দেশে সিএএ প্রয়োগ করব।

এক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, এটা পরিষ্কার যে শাহ সিএএ, রাম মন্দির এবং কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ধর্মীয় মেরুকরণের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছেন। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩০ শতাংশ ভোটার মুসলমান যারা সিএএ বিরোধী। এ কারণে বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করছে যাতে অধিকাংশ হিন্দু ভোট তাদের ঝুলিতে আসে।

মেরুকরণের চেষ্টার সাথেই মমতা সরকারকে অনেকভাবে আক্রমণ করেন এবং রাজ্যের মানুষকে ‘আর নয় অন্যায়’ নামক এক প্রচারে সামিল হতে বলেছেন। বক্তৃতার শেষের দিকে তাঁকে একটো ফোন নম্বর বলতে শোনা যায়। সেই নম্বরে মিসড কল দিতে বলেন তিনি। যা মানুষকে দ্রুত বিজেপির এই প্রচারের অংশীদার করে তুলবে।

এদিন পরিবারতন্ত্র নিয়েও তৃণমূলকে আঘাত করতে চান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, কোনো রাজপুত্রের হাতে আর বাংলার শাসনভার যাবে না। বাংলার ভূমিপুত্রের হাতেই যাবে বাংলার শাসনভার। ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ তথা মমতার ভাইপো অভিষেক এখন যুব তৃণমূল সভাপতি এবং বলতে গেলে পার্টির নাম্বার টু। হতে পারে পরিবারতন্ত্র নিয়ে সে দিকেই আঙুল তুলতে চেয়েছেন অমিত শাহ।

অমিত শাহ কলকাতা সফরের সময় শহরের বিভিন্ন প্রান্তে আজ বিক্ষোভ চলেছে। তাকে কালো পতাকা দেখানোর কর্মসূচিও নেওয়া হয় নানা জায়গায়। ‘গো ব্যাক অমিত শাহ’ শ্লোগান শোনা যায় শহরের নানা জায়গায়।