এবার দিল্লির জামিয়া মিল্লিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে গুলি

SHARE

সাম্প্রদায়িকভাবে বৈষম্যমূলক ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে দিল্লিতে বিক্ষোভ চলছিল বহুদিন ধরেই। সামিল হয়েছিলেন জামিয়া মিল্লিয়া বিশ্ববিদ্য়ালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার জামিয়া মিল্লিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে, রাজঘাটের প্রতিবাদ জমায়েতে আচমকা চলল গুলি।

সূত্রের খবর, এই ঘটনায় জখম হয়েছেন জামিয়ার এক ছাত্র। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গুলি করার আগে অভিযুক্ত চেঁচিয়ে উঠেছিল, ‘ইয়ে লো আজাদি!’ এরপই গুলি করে বসে সেই দুর্বৃত্ত।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত বন্দুকবাজের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারপর গুলিতে জখম শিক্ষার্থীকে হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর হাতে গুলি লেগেছে। সেখানেই চিকিৎসা চলছে জখম শিক্ষার্থীর।

জানা গেছে, তাঁর নাম শাদাব আলম। তিনি জামিয়ার মাস কমিউনিকেশনস বিভাগের ছাত্র।

উত্তেজনার জেরে যাতে যান চলাচলে বিঘ্ন না ঘটে, তাই ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে রুট। এর আগেও ১৫ ডিসেম্বর সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল জামিয়া মিল্লিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। তখনও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল অতি সক্রিয়তার। এর পরে ফের একই ঘটনা।

জানা গেছে, আজ, বৃহস্পতিবার মহাত্মা গান্ধীর ৭২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজঘাটের দিকে মিছিল করে যাচ্ছিলেন জামিয়ার পড়ুয়া-সহ সাধারণ মানুষ। সেই সময়েই ‘ইয়ে লো আজাদি’ বলে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে আসে সে।

কিছুদিন আগেই দিল্লির একটি জনসভায় ভারতের শাসক দল বিজেপির মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর স্লোগান তুলেছিলেন, ‘দেশকি গদ্দারো কো…’, তাতে জনতা গলা মিলিয়েছিল, ‘গোলি মারো সালো কো।’ এর পরেই এভাবে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটল প্রকাশ্য রাজপথে।

জানা গেছে, অভিযুক্ত বন্দুকবাজের নাম রামভক্ত গোপাল। গুলি-কাণ্ড ঘটানোর আগে ফেসবুকে তিনটি লাইভ ভিডিও শেয়ার করেছে সে। সেই ভিডিওতে দাবি করেছে, নিজের ধর্ম রক্ষা করতে যাচ্ছে সে। ‘জামিয়ার গদ্দারদের খেল খতম’ করতে সে গুলি চালাবে বলে দাবি করে প্রকাশ্য ভিডিওতে। তাতে বহু মানুষ সমর্থনও করে তাকে।

আন্দোলনকারীদের দাবি, এই মিছিলের অনুমতি করা ছিল অনেক আগে থেকে। মিছিল ঘিরে যাতে কোনও অশান্তি না হয, সে জন্য আগে থেকেই জামিয়ার বাইরে পুলিশ মোতায়েন ছিল। বিক্ষোভকারীদের আটকাতে ব্যারিকেডও বসানো হয়। তাই রাস্তার উপরেই বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা।

অভিযোগ, সেই সময়েই পুলিশি নিরাপত্তা টপকে, ব্যারিকেড পার করে, পিস্তল হাতে মিছিলের একেবারে সামনে চলে আসে অভিযুক্ত। প্রথমে আকাশের দিকে তাক করে ফায়ারিং চলে, তার পরে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় সে। গুলি লাগে এক ছাত্রের হাতে। সোশ্যাল সাইটে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে এমনটাই দেখা গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, পুলিশি পাহারা এড়িয়ে কীভাবে ওই যুবক গুলি চালাল।