দলের সঙ্গে নয়, আলাদা ফ্লাইটে যাচ্ছেন সাকিব

SHARE

আজ সকালের ফ্লাইটে আয়ারল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে বাংলাদেশ দল। আদতে যা বিশ্বকাপযাত্রাও। কিন্তু সেই যাত্রায় বাংলাদেশ দলের সঙ্গী হচ্ছেন না সাকিব আল হাসান। একই দিনে অন্য একটি এয়ারলাইনসে করে ডাবলিন যাবেন দেশসেরা এ অলরাউন্ডার। বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ফটোফ্রেমে না থাকা সাকিবের তিন দিনের ব্যবধানে এটা দ্বিতীয় একক যাত্রা।

না, তিনি একা যাচ্ছেন না। আয়ারল্যান্ড যাচ্ছেন সপরিবারে। দলকে বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসে সাকিবপত্নী ও শিশুকন্যার জন্য আসন না থাকাই এ ‘বিচ্ছেদে’র কারণ বলে জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী, ‘বাংলাদেশ দলের সবার সঙ্গে সাকিবের জন্যও টিকিট করা হয়েছিল। কিন্তু ও পরিবার নিয়ে যেতে চাচ্ছে বলেই আলাদা এয়ারলাইনস খুঁজতে হয়েছে।’ তবে সাকিব এয়ারলাইনস পাল্টালেও তাঁর জন্য ক্রয় করা এমিরেটসের বিজনেস ক্লাসের সিটটি ফাঁকাই যাচ্ছে। তার কারণও জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী, ‘একটি পিএনআর দিয়ে সবার টিকিট করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সাকিবের টিকিট বাতিল করতে হলে পিএনআর বাতিল করে নতুন করে টিকিট কাটতে হতো। তাতে সবার টিকিট একসঙ্গে না পাওয়ার ঝুঁকি ছিল। তাই ওর টিকিট আর বাতিল করা হয়নি।’

তাতে ফাঁকা সিটের ভাড়া তো কাউকে না কাউকে গুনতে হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির এক কর্মকর্তা উষ্মার সঙ্গে গতকাল বলছিলেন, ‘বোর্ডের উচিত টাকাটা সাকিবের কাছ থেকে কেটে নেওয়া!’ তবে নিজাম উদ্দিন জানিয়েছেন অতটা আর্থিক ক্ষতি হবে না বিসিবির, ‘বিশ্বকাপের জন্য আইসিসিই ভ্রমণ ব্যয় দেয়।’ কিন্তু আইসিসির তো ঢাকা-দুবাই-লন্ডন-দুবাই-ঢাকা টিকিট দেওয়ার কথা। ঘুরপথে ডাবলিন হয়ে লন্ডন যাওয়ার বাড়তি খরচ দেওয়ার কথা নয়! বিসিবির প্রধান নির্বাহী অবশেষে বলেছেন, ‘আইসিসির দেওয়া অর্থ আর ঢাকা-দুবাই-ডাবলিন-লন্ডন-দুবাই-ঢাকা টিকিটের পেছনে বাড়তি ব্যয় আমাদেরই বহন করতে হবে।’ সে ক্ষেত্রে বাড়তি ব্যয়ভার কে বহন করবে, তা নির্ধারিত হয়নি।

এদিকে এক দিন আগে সাকিব আল হাসানের টিম ফটো সেশনে অনুপস্থিত থাকা নিয়ে মিডিয়ায় প্রতিবেদন হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তোলপাড় হয়েছে। তার রেশ গতকাল উঁকিঝুঁকি দিয়েছে বিশ্বকাপের জার্সিকে ঘিরে উন্মাতাল উত্তেজনার ভিড়েও। সেখানে আবার নতুন মাত্রা দিয়েছেন মিসেস সাকিব। তিনি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে যে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ইংরেজিতে লেখা সেই স্ট্যাটাসের শুরুর মর্মার্থটা এ রকম, জাতীয় দলে এমন ক্রিকেটার আছেন, যাঁরা জনতার সমবেদনার জোরে খেলে যাচ্ছেন। আবার এমনও আছেন, যাঁরা সাংবাদিকদের বাসায় খাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করেন, দলের গোপন খবর দিয়ে দলে টিকে আছেন, যার কোনোটিই তাঁর স্বামী করেন না। এ নিয়ে খেলোয়াড় মহলে বিস্তর ফোন চালাচালি হয়েছে। এমনকি অনেক আগে জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়া এক তারকা ক্রিকেটারের মন্তব্য, ‘জঘন্য, এসব বলে কী করে! তবে কি সাকিব ছাড়া বিশ্বকাপের বাকি ১৪ জন পাবলিক আর জার্নালিস্টদের ম্যানেজ করে বিশ্বকাপে যাচ্ছে?’

পর পর দুটি ঘটনায় ক্রিকেট প্রশাসন থেকে শুরু করে খেলোয়াড় মহলে আকস্মিক ‘দরপতন’ও ঘটেছে সাকিবের। সোমবার মাঠে এসেও সাকিবের ফটো সেশনে অংশ না নেওয়ার ঘটনায় গতকালও গজরাতে দেখা গেছে একাধিক বোর্ড পরিচালককে। এমনকি সাকিবকে ‘কারণ দর্শানো’র নোটিশ দেওয়ার দাবিও তুলেছিলেন কেউ কেউ; কিন্তু সে আর হয়নি। তবে পরিস্থিতি যা, তাতে মনে হচ্ছে বিশ্বকাপে গেম প্ল্যানের চেয়ে সম্ভবত ‘ম্যান ম্যানেজমেন্ট’ নিয়েই বেশি মাথা ঘামাতে হবে বাংলাদেশ দলকে!