পৃথক অভিযানে ১১ ‘জঙ্গি’ নিহত

SHARE

gazipur-1_27179_1475925224
গাজীপুর ও টাঙ্গাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে সন্দেহভাজন ১১ জঙ্গি নিহত হয়েছে। জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পৃথক অভিযানে গাজীপুরের হারিনালের পশ্চিমপাড়ায় দুজন ও নোয়াগাঁও এলাকার পাতারটেকে সাতজন নিহত হয়েছে। আর টাঙ্গাইলে নিহত হয়েছে দুজন।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশিদ বলেন, নব্য জেএমবির ঢাকা বিভাগীয় কমান্ডার আকাশ তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে পাতারটেকে দোতলা একটি বাড়িতে অবস্থান করছেন এমন খবর ছিল। এরই ভিত্তিতে আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে সেখানে অভিযান চালায় জেলা পুলিশ, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট ও সোয়াট টিমের যৌথ দল। প্রথমে তাঁদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। কিন্তু তাঁরা তা না করে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও গ্রেনেড ছোড়েন। পুলিশও পাল্টা গুলি করে। বিকেল চারটা পর্যন্ত এ অভিযান চলে।

অভিযান শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সেখানে সাত ‘জঙ্গি’ নিহত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত যে তামিম চৌধুরীর পর যে নেতৃত্ব দিত, ছদ্মনাম হোক আর তাদের সাংগঠনিক হোক, তার নাম হচ্ছে আকাশ। সে এখানে নিহত হয়েছে, সেই সাতজনের মধ্যে একজন।’

এর আগে একই সন্দেহে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটা-চারটার ​দিকে গাজীপুর হারিনালের পশ্চিমপাড়ায় একটি বাড়িতে অভিযান চালায় র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এই অভিযান চলে বেলা তিনটা পর্যন্ত।

পরে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান প্রথম আলোকে বলেন, হারিনালের পশ্চিমপাড়ায় ‘জঙ্গি আস্তানা’ সন্দেহে একটি বাড়িতে র‍্যাবের অভিযান চলাকালে দুই ‘জঙ্গি’ নিহত হয়েছেন। বাড়ির মালিক জানিয়েছেন, তাঁদের নাম রাশেদ মিয়া ও তৌহিদুল ইসলাম। তাঁদের বাড়ি নরসিংদীতে।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, একটি একে টোয়েন্টি টু উদ্ধার করা হয়েছে।

র‍্যাব-১-এর গাজীপুর অঞ্চলের কমান্ডার মহিউল ইসলাম বলেন, লাশ দুটি উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে টাঙ্গাইল শহরের কাগমারা মির্জামাঠ এলাকায় একটি বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালিয়েছে। র‍্যাব বলছে, সেখানে দুজন ‘জঙ্গি’ নিহত হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

র‍্যাব-১২-এর তিন নম্বর কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকীর ভাষ্য, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বাড়িটিতে সকাল ১০টার​ দিকে অভিযান চালানো হয়। ভেতরে ঢোকার পর এক ‘জঙ্গিকে’ গ্রেপ্তার করতে গেলে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় অন্য ‘জঙ্গিরা’ র‍্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার চেষ্টা চালায়। র‍্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে দুজন ‘জঙ্গি’ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। বেলা দেড়টার দিকে বোমা বিশেষজ্ঞ দলকে নিয়ে ভেতরে ঢোকে র‍্যাবের দল। এরপর তারা লাশ দুটি বের করে নিয়ে আসে। এখন লাশ টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘর থেকে একটি পিস্তল, ​একটি রিভলবার, ১০টি চাপাতি, দুটি ছুরি ও ৬৪ হাজার ৯০০ টাকা উদ্ধার হয়েছে।

ওই বাড়ির মালিক অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আজাহার আলী বলেন, ছাত্র পরিচয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর তারা বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ ভাড়া নেয়। এ সময় তাদের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র চাওয়া হলে বলে দু–এক দিনের মধ্যে দিয়ে দেবে।