দেড় বছরে ১৯০০০ বিরোধী নেতাকর্মীর আ.লীগে যোগদান

SHARE

jogdan aligগত দেড় বছরে বিএনপি-জামায়াতের প্রায় ১৯ হাজার নেতাকর্মী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দৈনিক প্রথম আলো।

শনিবার এক প্রতিবেদনে দৈনিকটি জানায়, এসময় বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় এ রকম যোগদানের ঘটনা ঘটেছে অন্তত ৬২টি। আর যোগদানকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজারের বেশি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাধারণত দলবদলের হিড়িক পড়ে জাতীয় নির্বাচনের আগে। তবে এবার ৫ জানুয়ারির একতরফা জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা সরকারি দলে যোগ দিতে শুরু করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা, এমনকি বিএনপি বা আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও মনে করছেন, দলবদলের এই প্রক্রিয়ায় আদর্শিক কোনো বিষয় নেই, পুরোটাই ব্যক্তিগত স্বার্থ পূরণ, আত্মরক্ষা এবং রাজনীতিতে টিকে থাকার  কৌশলের অংশ।

আওয়ামী লীগে যোগদানের কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচিত হওয়া বা টিকে থাকা, মামলা থেকে রক্ষা পাওয়া, নির্বিঘ্নে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়া, পুলিশের ধাওয়া থেকে সুরক্ষা, আত্মীয়স্বজনের চাকরির সুযোগ, বিএনপির স্থানীয় কোন্দল, হতাশা এবং যুদ্ধাপরাধে জামায়াত নেতাদের বিচারসহ নানা কারণে ওই দুটি দল ছাড়ার ঘটনা ঘটছে।

তবে জাতীয় পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য কোনো নেতা এখনো দলবদলের সারিতে আসেননি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আসন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের অনেকেই দলবদল করছেন। গত উপজেলা নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে তাদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, এসব নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে না। তাই নির্বাচনে জিততে চাইলে সরকারি দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকতেই হবে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, উত্তর ও দক্ষিণ মেরু এক হতে পারে না। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির পরবর্তী সভায় বিষয়টি তোলা হবে। বিষয়টি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী অবগত আছেন বলেও জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আদর্শের জন্য নয়, মামলা থেকে রক্ষা বা অন্য কোনো কারণে এই দলবদল হচ্ছে বলে মনে হয়।’

বিএনপির নেতারাও মনে করছেন, আদর্শের জন্য এই দলবদল নয়। একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় নেতা বলেন, কিছু নেতা-কর্মী গেলে তাতে বড় দলের ওপর কোনো প্রভাব পড়ে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, দলবদলের মাধ্যমে হয়তো কিছু লোক সাময়িক স্বস্তি খুঁজছে। মাঠপর্যায়ে নির্যাতন, অব্যাহত চাপ, পুলিশের তাড়া ও মামলা, ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখা, নিশ্চিন্তে বাড়িতে ঘুমাতে পারার মতো কয়েকটি কারণ রয়েছে দলবদলের পেছনে।

মাহবুবুর রহমানের মতে, কোনো কোনো এলাকায় সরকারি দলের লক্ষ্য হচ্ছে নিজেদের দল ভারী করা। যেখানে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা ভালো, সেখান থেকে কিছু লোক ভাগিয়ে নেওয়া। এ ছাড়া দলবদলের প্রক্রিয়ায় কিছু আর্থিক লেনদেন ও সুযোগ-সুবিধা ভাগাভাগি হয় বলেও জানান তিনি।