পল্লবীর জোড়া খুনের নেপথ্যে

SHARE

switeরাজধানীর পল্লবীতে জোড়া খুনের নেপথ্যে চাঁদা ও ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জের রয়েছে বলে ধারণা পুলিশ ও পরিবারের।

বুধবার দুপুরে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী সুইটি আক্তার (২৫) ও তার মামা আমিনুল ইসলামকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় ছেলে সাদ (৫) মারাত্মকভাবে আহত হয়। পল্লবীর ২০ নম্বর সড়কের ৯ নম্বর ‘ক্রিস্টাল ডি আমিন’ নামে একটি বাড়ির ৬ষ্ঠ তলায় এ ঘটনা ঘটে।

সুইটির স্বামী জাহিদুল বলেন, গত মার্চ মাসের শেষের দিকে মুন্না নামের এক সন্ত্রাসী ফোন দিয়ে জিসানের নামের একজনের সঙ্গে কথা বলার জন্য ফোন ধরিয়ে দেয়। এরপর জিসান নামের ব্যক্তি তার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তা না হলে হত্যা করার হুমকি দেয়।

এ ঘটনায় পল্লবী থানায় তিনি একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলেও পুলিশ কোনো গুরুত্ব দেয়নি এবং পরবর্তীতে যোগাযোগও করেনি বলে তার অভিযোগ।

চাঁদাবাজির বিষয়টি ছাড়া ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের কারণেও এই খুনের ঘটনা ঘটতে পারে বলেও তিনি অনুমান করেন।

তিনি জানান, ব্যবসায়িক কারণে শাহীন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে স্ত্রী সুইটির দ্বন্দ্ব ছিল।

তিনি বলেন, চাকরির পাশাপাশি জাহিদুল ‘ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার’ নামে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলেন সুইটি আক্তার। শাহীন ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন। কয়েকদিন আগে কোম্পানি আলাদা হয়ে যায়। এনিয়ে শাহীনের সঙ্গে স্ত্রী সুইটির কথা কাটাকাটি হয়।

এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার নিসারুল আরিফ বলেন, ‘২৫ থেকে ৩২ বছর বয়সী দুই যুবকের এলোপাতারি কোপে সুইটি ও তার মামাশ্বশুর আমিনুল ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আমিনুলের শরীরে বেশি আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।’

ঘটনাস্থল থেকে ছুরির বাট এবং বাট ছাড়া ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সময়ে বাসায় থাকা সুইটির ছেলে সাদ বাথরুমে ছিল। তার বাম চোখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

খুনের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জাহিদুল চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করতেন। বেশ কয়েকদিন আগে তার কাছে চাঁদা চেয়ে হুমকি দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। চাঁদা ও ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব দুটোকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।’

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী আবদুল খালেক এবং নিহত সুইটির ব্যবসায়িক অংশীদার শাহীনকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘খুনের ঘটনাটি পরিকল্পিত মনে হচ্ছে। আধা ঘণ্টার মধ্যে খুনের ঘটনা ঘটিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়েছে হত্যাকারীরা। প্রাথমিক পর্যায়ে খুনের কারণ সম্পর্কে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’