ফুলেল শ্রদ্ধায় জাতীয় কবিকে স্মরণ

SHARE

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবির সমাধিতে এ শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়।

বরাবরের মতো কবির পরিবার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, কবি নজরুল সাহিত্য মঞ্চ, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

সকাল সোয়া ৭ টায় ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা সহকারে কবির সমাধিতে গমন, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করা হয়।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভুইয়া, বাংলাবিভাগের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, সহকারী প্রক্টর ড. আবদুর রহিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামি লীগের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানায় দলটি।

সকাল ৯টার দিকে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনকালে ওবায়দুল কাদের বলেন, সারা বিশ্ব আজ করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত। জাতীয় কবি মানবতার বাণি শুনিয়েছেন আমাদের। তার বাণী বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অসাম্প্রদায়িক চেতনা চিরদিন বাঙ্গালীর অনুপ্রেরণার শক্তি হিসেবে কাজ করবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ সমূলে উৎপাটন করতে হবে।

এসময় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এসময় তিনি বলেন, বিদ্রোহী কবির লেখনী থেকে জাতিকে সব শৃঙ্খল থেকে এগিয়ে যাওয়ার তাগিদটা অপরিসীম। আমরা নতুন করে সৃষ্টি করবো গণতন্ত্র। আমরা মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করবো। সৃষ্টি সুখের উল্লাসে এখানে অমানিশা দূর করে সূর্যের আলো নিয়ে এসে এ বাংলাদেশকে ভরিয়ে তুলবে এ জাতীয়তাবাদী শক্তি। আপনারা দেখেছেন এখন এ দেশে কোনো সত্য নেই। এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান জিয়াউর রহমান। তাকে প্রতিনিয়ত অপমান করা হচ্ছে। তাকে নানাভাবে কটুকথা বলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন কী না তার কোনো প্রমাণ নেই। তারও আবার কে বলেছেন? দেশের প্রধানমন্ত্রী।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছে কবি নজরুল সাহিত্য মঞ্চ। এর মধ্যে রয়েছে-বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি ঘোষণা করা, কবির জন্ম ও মৃত্যুর দিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা, কবির নামে সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক সাহিত্য পদক দেওয়া, ধানমন্ডির কবি ভবনকে আন্তর্জাতিক মানের সাহিত্য জাদুঘর স্থাপন করা, কবির জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকীর অনুষ্ঠান রাষ্ট্রয়ীভাবে পালন করা। এছাড়া সড়ক ও জেলার নামকরণ কবির নাম দিয়ে করার দাবি জানানো হয়।

অপরদিকে, যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় কবির ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ১০ টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ক্লাসরুমে এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আলোচনা সভায় নজরুল বিশেষজ্ঞ হিসেবে জাতীয় অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম বক্তব্য রাখবেন।