অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতির সঙ্গে সচিবদের দ্বিমত

SHARE

বরিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলার ঘটনার পর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দেয়া বিবৃতির বিষয়ে সচিবসহ প্রশাসনের কর্মকর্তার দ্বিমত পোষণ করেছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

আজ সোমবার (২৩ আগস্ট) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ কথা জানান।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সচিবালয় থেকে বৈঠকে যুক্ত ছিলেন।

বরিশালের যে ঘটনা ঘটেছে সেই বিষয়ে আপনাদের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা আছে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটি তো আমরা ক্লোজলি অবজার্ব করছি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা দেখছি যে একটা মিস কমিউনিকেশন থেকে এগুলো শুরু হয়। সেটাই ইন্সট্রাকশন দিয়ে দেয়া হয়েছে মাঠ পর্যায়ের সবাইকে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকেও বলে দেয়া হয়েছে, ক্যাবিনেট থেকেও বলে দেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা জনপ্রতিনিধি সবাইকে বলা হয়েছে- আপনারা নিয়মিত ইন্টারঅ্যাকশন (মতবিনিময়) করবেন। ইন্টারঅ্যাকশন যেখানে কম হয়, সেখানেই এ ধরনের মিস কমিউনিকেশনের বিব্রতকর ঘটনাগুলো ঘটে।’

খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘এগুলো যাতে না ঘটে, সে জন্য তাদের (বরিশালের) বলা হয়েছে আপনারা নিজেরা আগে বসেন। বসে দেখেন কী সমাধান করা যায়। আপনারা সমাধান করতে না পারলে, আইন তো আছেই। আপনারা দেখেন এসব ঘটনা কেন ঘটছে?’

তিনি বলেন, ‘বরিশালের ঘটনা এক্সাক্টলি কী, আমরা জানি না। আমরা আগে তাদেরই দায়িত্ব দিয়েছি, নিজেরা বসেন। সব লেভেলেই বলা হয়েছে। কেন সবাইকে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। কার কোথায় ফল্ট আছে নিজেরা দেখেন। দেখা যাক, তারা সময় নিয়েছেন, নিজেরা আগে দেখি।’

অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে প্রতিক্রিয়া এসেছে- এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গতকালকে একটা মিটিং ছিল সেখানে আমি যখন কথা বলছি… সচিবরা এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা যারা চিলেন তারা সবাই এই বিবৃতির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। এই ল্যাঙ্গুয়েজ হওয়া উচিত ছিল না। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের যারা ছিলেন তারাও অ্যাগ্রি করেছেন- এ ধরনের ভাষা ব্যবহার ভুল হয়েছে। এ ধরনের ভাষা ব্যবহার শোভনীয় নয়।’

গত ১৮ আগস্ট রাতে বরিশালের সিঅ্যান্ডবি সড়কে উপজেলা পরিষদ কম্পাউন্ডে শোক দিবসের ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে রাতভর সংঘর্ষ হয়। এ সময় ইউএনওর সরকারি বাসভবনেও হামলার অভিযোগ করা হয়।

পরের দিন বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) মামলা হয়। মামলায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে হুকুমের আসামি করা হয়।

১৯ আগস্ট রাতে এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানায় বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। অ্যাসোসিয়েশনের পাঠানো প্রেস রিলিজে জানানো হয়, ‘মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ও তার দুর্বৃত্ত বাহিনী সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের দিয়ে নানা প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে এবং সমস্ত জেলায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এমন কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা জানায় এবং বরিশালের মেয়র যার অত্যাচারে সমগ্র বরিশালবাসী অত্যন্ত অতিষ্ঠ সেই সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর হুকুমেই এই ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে তারা মনে করেন। অতএব, অ্যাসোসিয়েশন অবিলম্বে তার গ্রেফতার দাবি করছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।’