তিন মাসে খেলাপি ঋণ বাড়ল ৩৮৯৯ কোটি টাকা

SHARE

বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শেষ প্রতিবেদন বলছে, গত মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা।

এর আগে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণ বেড়েছিল ৬ হাজার ৮০২ কোটি টাকা। এই হিসাবে চলতি বছরের ছয় মাসে খেলাপি ঋণ বাড়ল ১০ হাজার ৭০১ কোটি টাকা।

সব মিলিয়ে এখন খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ কোটি টাকা ছুঁইছুঁই। বিতরণ করা মোট ১১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে ৯৮ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। শতকরা হিসেবে মোট ঋণের ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ এখন খেলাপি। মার্চ মাস শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৪ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। ওই সময় দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

এই খেলাপির মধ্যে কোন ব্যাংকের কত বা সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের অংশ কত, সেই পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখনও পাওয়া যায়নি।

তবে গত মার্চের হিসাবে দেখা যায়, বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় সরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কয়েক গুণ বেশি।

ওই হিসাবে পুঁজিবাজারের ৩১টি ব্যাংকে গড় খেলাপির হার ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর পুঁজিবাজারে নেই, এমন সরকারি ব্যাংকে খেলাপির হার ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ।

গত ৬ মাসে বাড়লেও খেলাপি ঋণ ও শতকরা হার বাড়লেও ২০২০ সালের জুনের তুলনায় শতকরা হারে খেলাপি কমেছে। সে সময় বিতরণ করা ঋণের মধ্যে খেলাপি ছিল ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।

অবশ্য বিতরণ করা ঋণ কম ছিল বলে এখনকার চেয়ে টাকার অঙ্কে খেলাপি কম ছিল। সে সময় মোট খেলাপি ছিল ৯৬ হাজার ১১৭ কোটি টাকা।

খেলাপি ঋণের সমস্যা সমাধানে ২০১৯ সালে ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে ১০ বছরের জন্য ৫২ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকার ঋণ নিয়মিত করা হয়। যে কারণে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ আগে কমে যায়।

তবে ২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাবে তৈরি হয় নতুন পরিস্থিতি। ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দাভাব, নতুন বিনিয়োগে অনাগ্রহের কারণে ব্যাংকের কিস্তি দেয়া অনিশ্চিত হয়ে যায়। আর বাস্তবতা বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকও দেয় বিশেষ ‍সুবিধা। ঋণের কিস্তি জমা না দিলেও খেলাপির তালিকায় নাম উঠবে না, এমন সুবিধায় ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সাল শেষে খেলাপি ঋণ কমে ছয় হাজার কোটি টাকার মতো।

তবে কিস্তি পুরোপুরি জমা না দেয়ার সুবিধা এখন নেই। কিস্তির একটি অংশ এখন জমা দিতে হচ্ছে। কিন্তু জমা না পড়ায় খেলাপির পরিমাণ আবার বাড়ছে।