রাজধানীর ৭টি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ

SHARE

পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে অধিক মূল্য রাখা, সনদ প্রাপ্ত চিকিৎসক না থাকা এবং একই আইসিইউ-তে কোভিড ও নন-কোভিড রোগীর চিকিৎসাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে রাজধানীর ৭টি বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ওই সকল হাসপাতালের লাইসেন্স কেন বাতিল হবে না জানতে চেয়েও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকার মোহাম্মদপুরের মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারে অবস্থিত ৬টি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ১টি ব্লাড ব্যাংক সহ মোট ৭টি প্রতিষ্ঠান গত ২৮ জুলাই আকস্মিক পরিদর্শনে নানাবিধ অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়।

প্রাপ্ত অনিয়মের ভিত্তিতে মহাপরিচালকের অনুমোদন সাপেক্ষে ৭টি প্রতিষ্ঠানকে সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হলো এবং কেন তাদের লাইসেন্স বাতিল হবে না মর্মে কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠান সমূহের নাম ও বন্ধের কারণ সমূহ-

প্রাইম অর্থোপেডিক ও জেনারেল হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার

– বিএমডিসি সনদপ্রাপ্ত কোনো চিকিৎসক কর্মরত পাওয়া যায় নাই।
– পর্যাপ্ত সংখ্যক নার্স কর্মরত পাওয়া যায় নাই।
– ল্যাব টেকনোলজিস্ট পাওয়া যায় নাই।
– রোগীদের নিকট থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে অধিক মূল্য রাখার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

ঢাকা হেলথকেয়ার হসপিটাল

– পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স কর্মরত পাওয়া যায় নাই।
– প্রয়োজন ছাড়া শুধুমাত্র ব্যবসায়িক স্বার্থে আইসিউতে রোগী রেখে অনৈতিক প্র্যাকটিসের প্রমাণ পাওয়া যায়।
– রোগীদের নিকট থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে অধিক মূল্য রাখার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

রিমেডি কেয়ার লিমিটেড

– হালনাগ লাইসেন্স ছাড়াই ক্লিনিকটি অবৈধ ভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
– আইসিইউ সর্বস্ব হাসপাতাল বানিয়ে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে দালালের সহায়তায় হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছে।
– বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা (আইপিসি) খুবই অসন্তোষজনক।

লাইফ কেয়ার জেনারেল হসপিটাল

– পরিদর্শনকালে হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ও নার্স কর্মরত পাওয়া যায় নাই।
– বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা (আইপিসি) খুবই অসন্তোষজনক।

যমুনা জেনারেল হসপিটাল

– একই আইসিইউ তে একইসঙ্গে কোভিড এবং নন কোভিড রোগীর চিকিৎসা করা হচ্ছে।
– সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে অধিক মূল্যে অক্সিজেন বিল করা হচ্ছে। ৩) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা (আইপিসি) খুবই অসন্তোষজনক।

রয়াল মাল্টিকেয়ার স্পেশালটি হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার

– পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স কর্মরত পাওয়া যায় নাই।
– বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষায় সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে অধিক মূল্য রাখা হচ্ছে। ৩) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা (আইপিসি) খুবই অসন্তোষজনক।

রাজধানী ব্লাড ব্যাংক অ্যান্ড ট্রান্সফিউশন সেন্টার

– বিএমডিসি সনদ প্রাপ্ত কোনো এমবিবিএস চিকিৎসক কর্মরত পাওয়া যায় নাই।
– নার্স, ব্লাড কালেকশন টেকনোলজিস্ট এবং ল্যাব এটেন্ডেন্ট পাওয়া যায় নাই।

এর আগে গত ২ আগস্ট করোনা পরীক্ষায় অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় রাজধানীর প্রাভা হেলথকেয়ার এর কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের নির্দেশ দিয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

চিঠিটি প্রাভা হেলথকেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠিয়ে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটি ওই প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করে বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পেয়েছে, যা অগ্রহণযোগ্য। এ অবস্থায় তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনের আলোকে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হল।