সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে: বিএনপি

SHARE

image_79077_0‘সারা দেশে গুম-খুন-নির্যাতনের মাধ্যমে সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিকে মধ্যযুগীয় সমাজের সঙ্গে তুলনা করা যায়। কারণ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে।”

গুম-খুন-নির্যাতন ও খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ সারাদেশের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা।

ফখরুল বলেন, “দলীয় সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী-২০১৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত র‌্যাব, পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় ২৭২ জন নেতা-কর্মী খুন এবং ২৫ জন নেতা-কর্মী গুম হয়েছেন। দেশে ও বিদেশে আমরা এসব চিত্র তুলে ধরতে চাই।”

এই গুম-খুন-নির্যাতনের ঘটনাগুলো কেন ঘটছে, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এসব বিষয় জনসম্মুখে তুলে ধরতে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, “নিজেদের দুর্নীতির মামলাগুলো প্রত্যাহার করে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে হেয় প্রতিপন্ন করতে সরকার দুদককে ব্যবহার করে একের পর এক মিথ্যা মামলা করছে। এর মাধ্যমে তারা (সরকার) জাতীয়তাবাদ ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করতে চায়।”

তিনি বলেন, “বিদেশের কিছু হিতাকাঙ্ক্ষী বিএনপিকে কিছু অর্থ দেয়ার পর দলের চেয়ারপারসন তা ইয়াতিমদের জন্য কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন।পরে সে অনুযায়ী একটি ট্রাস্ট গঠন করে বগুড়া ও খুলনায় কাজও শুরু হয়; যার চেয়ারম্যান বেগম খালেদা জিয়া। আর টাকাগুলো এখনো অ্যাকাউন্টে রয়েছে। অথচ মামলা করা হয়েছে এই টাকায় দুর্নীতি হয়েছে এমন অভিযোগে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”

ফখরুল বলেন, “একইভাবে দলের কার্যালয়ের জন্য জমি কেনার বিষয়ে যে অভিযোগে মামলা করা হয়েছে তাও সম্পূ্র্ণ মিথ্যা।”

তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলার সমালোচনা করে বলেন, “বারবার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তাকে জড়ানো হয়েছে।” তারেকের বিরুদ্ধে করা মানি লন্ডারিং মামলায় খালাস দেয়া বিচারকের বিরুদ্ধে সরকার চড়াও হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

দেশে কোনো মানুষ নিরাপদ নয় ও বাংলাদেশ অরক্ষিত এমন মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “গতকাল নারায়ণগঞ্জে কাউন্সিলরসহ পাঁচজনকে তুলে নেয়া হয়েছে, এখনো হদিস নেই। এই অবস্থা ৭২ থেকে ৭৫ সালে ছিল। তখন মানুষকে তুলে নিয়ে যাওয়া হতো, পরে লাশ পাওয়া যেত। এমনও ছিল ছেলেকে দিয়ে বাবার মাথা কেটে ফুটবল খেলতে বাধ্য করা হতো।” তিনি বলেন, “আমরা তো এমন বাংলাদেশ চাইনি।এজন্য তো দেশ স্বাধীন করিনি।”

নেতাকর্মীদের আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “পাড়া মহল্লায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে অজেয় দুর্বার সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। যারা কারো কাছে মাথা নত করবে না। কারণ আন্দোলনের মাধ্যমেই এই স্বৈরাচারি পশু সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। অন্যথায় গুম, খুন বন্ধ হবে না।”

এতে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, অর্থ সম্পাদক আবদুস সালাম, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, শিক্ষা সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ।