হাসপাতালে জায়গা নেই, হোটেল খুঁজছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

SHARE

সারা দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালগুলোর ৯০ শতাংশ আসন পূর্ণ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। এসময় পাশে ছিলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৯০ শতাংশ সিটে রোগী আছে। অর্থাৎ ফাঁকা নাই। আইসিইউ ৯৫ শতাংশ এরইমধ্যে পূর্ণ হয়ে গেছে। এসব চিন্তা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করছি, সেটার কাজও চলমান আছে। সেখানে হয়তো ৫০০-৬০০ বেড তাৎক্ষণিকভাবে প্রস্তুত করতে পারব, পর্যায়ক্রমে ১০০০ বেডে যাওয়া যাবে। এরপর তো আর হাসপাতালে জায়গা নাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যারা মৃদু আক্রান্ত, সকলেরই তো হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ে না, মাইনকেস সে সমস্ত রোগীদের জন্য আলাদা হোটেল ভাড়া করার চিন্তা করেছি। যে হোটেলের মধ্যে ডাক্তার থাকবে, নার্স থাকবে, ওষুধপত্রও থাকবে, কিছু অক্সিজেনের ব্যবস্থাও আমরা রাখবো। আর তো আমাদের হাসপাতলে কোন জায়গা নাই, হাসপাতাল খালিও নাই, কাজেই আমরা এখন হোটেল খুঁজছি, যেখানে এই ব্যবস্থা করতে পারি। মৃদু যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদেরকে সেখানে রাখতে পারি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ৭ আগস্ট থেকে ৭ দিনের জন্য বাংলাদেশের প্রত্যেকটা ইউনিয়নের ওয়ার্ডে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এই সাত দিনে আমরা প্রায় এক কোটি টিকা দিব, এটাই আমাদের উদ্দেশ্য এবং সেই টিকা দেওয়ার জন্য অনেকের সহযোগিতা লাগবে।

মন্ত্রী বলেন, টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে যারা বয়স্ক, বিশেষ করে গ্রামের যারা বয়স্ক তাদেরকে অগ্রাধিকার দিব। অর্থাৎ ৫০ ঊর্ধ্ব যারা তাদেরকে অগ্রাধিকার দিব। কারণ তাদের মৃত্যুর হার বর্তমানে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ। গ্রামের বয়স্করা বেশি মৃত্যুবরণ করছে, সেজন্য টিকাটা গ্রামে নিয়ে যাচ্ছি, সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেবো।

টিকার মজুদ নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের হাতে সোয়া কোটি টিকা আছে। এ মাসে আরও প্রায় এক কোটি টিকা এসে আমাদের হাতে পৌঁছাবে। অর্থাৎ আমাদের টিকা কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

জাহিদ মালেক বলেন, আজকের সভায় আরও জোর দেওয়া হয়েছে যাতে স্থানীয়ভাবে টিকা উৎপাদন করি। ইতিমধ্যে চীনের সিনোফার্মের সাথে এবং বাংলাদেশের একটি কোম্পানির সাথে টিকা উৎপাদন কার্যক্রমের বিষয়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছে। আইন মন্ত্রণালয়েরও অনাপত্তিপত্র পেয়ে গেছি।

মন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিনের পাশাপাশি মাস্ক পরিধান করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এটাকে যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে চাই, প্রয়োগ করতে চাই তাহলে পুলিশকেও ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যাতে করে যারা মাস্ক পরবে না তাদেরকে কিছুটা হলেও জরিমানা করতে পারে। এ বিষয়ে একটা অধ্যাদেশ লাগবে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, হয়তোবা সেদিকেও আমরা যাব।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হয়েছে, আগামীতে আস্তে আস্তে অন্যান্য শিল্প খুলে দেওয়া হবে, আস্তে আস্তে আমাদের ট্রান্সপোর্ট, দোকানপাটও খুলবে, ধাপে ধাপে সব খুলবে। তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, টিকা নিতে হবে।