রোজিনাকে নিয়ে ফায়দা লুটতে চায় দেশবিরোধীরা : তথ্যমন্ত্রী

SHARE

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড: হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘গত ১৭ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিক রোজিনার ঘটনাকে পুঁজি করে দেশবিরোধী চিহ্নিত মহল ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে, কারো কর্মকান্ড যেন তাদের হাতে অস্ত্র তুলে না দেয়।’

আজ শনিবার দুপুরে মন্ত্রী তার মিন্টু রোডের সরকারি বাসভবনে টিভি নাট্যপরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে সাক্ষাতশেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন। গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দীন লাভলু, সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুজ্জামান সাগরসহ নির্বাহী সদস্যবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

‘রোজিনার ঘটনাকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে এবং দেশবিরোধী মহল এটি নিয়ে অতি তৎপর হয়ে উঠেছে’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, ‘এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ফিলিস্তিনে নারী-শিশুসহ শতশত প্রাণহানি ঘটার পর বিবৃতি দিতে অনেকদিন সময় লাগলেও বিচারাধীন রোজিনা ইস্যুতে তারা পরদিনই বক্তব্য দিলো।’

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশবিরোধী বিভিন্ন চক্র যারা বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, কুৎসা রটায়, মিথ্যা অপপ্রচার চালায়, তাদেরও সক্রিয় হতে দেখা গেছে। বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মুশফিক ফজল জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে গিয়ে একটি প্রশ্ন করে এক কর্মকর্তার কাছে থেকে সার্বজনীন গণমাধ্যম বিষয়ক একটি জবাব আদায় করেছে। সেই বক্তব্যকেই রোজিনার বিষয়ে জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টার করেছে। জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তার বক্তব্য আর জাতিসংঘের উদ্বেগ এক নয়।’

‘মন্ত্রী, সচিব বা রোজিনা ইসলাম কেউই আইনের উর্ধ্বে নন’ স্মরণ করিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের কোনো কর্মকান্ডকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে দেশবিরোধীরা যাতে দেশের ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে রোজিনার স্বামীর ব্যবসায়িক সংশ্লিষ্টতা এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অতীতে রোজিনার এ ধরনের ঘটনার প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেটি আমি সামাজিক ও গণমাধ্যমে দেখেছি, তবে যেহেতু তদন্ত চলছে, তদন্তেই সেগুলো বেরিয়ে আসবে।

এবিষয়ে বিএনপি মহাসচিবের দেয়া বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, বিএনপি যখন রোজিনা ইস্যুতে বক্তব্য দিতে থাকে, তখন বুঝতে হবে, এটিকে রাজনৈতিক রূপ দেয়ার অপচেষ্টা চলছে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শিক্ষা উপমন্ত্রীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মতের অমিল হলেই কাউকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা কখনোই সমীচীন নয়।

উল্লেখ্য গত ১৭ মে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি কক্ষ থেকে গোপনে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ নথির ছবি তোলা এবং জরুরি তথ্য সম্বলিত কাগজ সরিয়ে নেয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম এখন আদালতে বিচারাধীন।

পরে মন্ত্রী বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে রোজিনার বিষয়টি আবেগতাড়িতভাবে না দেখে বাস্তবতার নিরিখে দেখার আহবান জানান। বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. আবদুল মজিদ, সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, নির্বাহী সদস্য ইব্রাহিম খলিল খোকন, সিনিয়র সাংবাদিক মোতাহার হোসেন প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

ডিরেক্টরস গিল্ডের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে সহসভাপতিত্রয় মাসুম আজিজ, ফরিদুল হাসান, রফিকুল্লাহ সেলিম, যুগ্ম সম্পাদকদ্বয় পিকলু চৌধুরী, ফিরোজ খান, অর্থ সম্পাদক সাজ্জাদ সনি, সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরারী অমিত, প্রচার সম্পাদক সহিদ উন নবী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মোস্তফা মনন, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক আনিসুল হক ইমেল, আইন সম্পাদক মাহমুদ নিয়াজ চন্দ্রদ্বীপ, দপ্তর সম্পাদক গোলাম মুকতাদির শান ও নির্বাহী সদস্যবৃন্দ মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতে যোগ দেন।