নাগরিকদের ভারত ছেড়ে আসার ডাক আমেরিকার

SHARE

এ দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় সম্প্রতি আমেরিকানদের ভারতে পাড়ি না-দেওয়ার উপদেশ দিয়েছিল আমেরিকার প্রশাসন। এ বার ভারতে বসবাসকারী আমেরিকানদেরও দ্রুত দেশে ফেরার আবেদন জানাল তারা।

দ্য ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স এবং এয়ার ইন্ডিয়ার বেশ কিছু উড়ান এখনও সরাসরি চলাচল করছে দু’দেশের মধ্যে। প্যারিস বা দোহা হয়ে আসতে চাইলে এয়ার ফ্রান্স বা কাতার এয়ারওয়েজ়-এর মতো বিমান সংস্থাও রয়েছে। এখনও ভারতে রয়ে যাওয়া সে দেশের নাগরিকদের কাছে আমেরিকার প্রশাসনের আর্জি, ‘‘এই পরিষেবাগুলির সাহায্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে ফিরে আসুন।’’

তবে শর্ত হল ভারত থেকে ফেরার বিমানে ওঠার আগে কোভিড পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিতে হবে যাত্রীদের। যা তিন দিনের বেশি পুরোনো হওয়া চলবে না। যদি কেউ ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্ত হয়ে থাকেন তা হলে সেই সংক্রান্ত তথ্যের পাশাপাশি বর্তমানে যে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ তার প্রমাণ হিসেবে কোনও স্বাস্থ্য আধিকারিকের দেওয়া অনুমতিপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। একই সঙ্গে, সকল যাত্রীকেই আমেরিকায় ফিরেও পালন করতে হবে যথাযথ নিয়মবিধি।

এ দিকে, ভারতে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর দেশ জুড়ে ভয়াবহ আকার নিয়েছে অক্সিজেন সঙ্কট। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে এ বার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান চিকিৎসকদের একটি দল। শুক্রবার ‘ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ফিজ়িশিয়নস অ্যাসোসিয়েশন’ (এফআইপিএ) নামে ওই নবগঠিত সংগঠনটি জানায়, মোট পাঁচ হাজার অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ভারতে পাঠাচ্ছে তারা। যার মধ্যে ৪৫০টি ইতিমধ্যেই আমদাবাদে পৌঁছে গিয়েছে। তা ছাড়া দিল্লির জন্য ৩২৫টি এবং মুম্বইয়ে ৩০০টি পাঠানো হয়েছে। যা পৌঁছে যাবে কিছু দিনের মধ্যেই।

প্রত্যন্ত এলাকার বিভিন্ন কোভিড হাসপাতাল, নিভৃতাবাস, অস্থায়ী হাসপাতালের পাশাপাশি নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাতে এই কনসেনট্রেটরগুলি তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সংগঠনের প্রেসিডেন্ট, চিকিৎসক রাজ ভয়ানী। কিন্তু এখনও তাদের কাছে ৩৫০০টি কনসেনট্রেটর মেশিন পড়ে রয়েছে। যা দ্রুত এ দেশে পৌঁছে দিতে ইতিমধ্যেই ভারতীয় দূতাবাসের পাশাপাশি বিমান মন্ত্রক এবং এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

‘সেহগল ফাউন্ডেশন’ নামে আমেরিকার আইওয়া-র এক সংগঠনও ২০০টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠাচ্ছে ভারতে। সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে গ্রেটার বস্টনের ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের একটি দলও। অর্থ সংগ্রহ করতে এই সপ্তাহান্তে এক ‘ভার্চুয়াল ওয়াক/রান’-এর আয়োজন করেছে তারা।

তহবিল গড়ে অর্থ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে আমেরিকার কনেক্টিকটের ‘কেরল অ্যাসোসিয়েশন’-ও। ‘গিভ ইন্ডিয়া’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী প্ল্যাটফর্ম মারফত এই তহবিলের টাকা দিয়ে অক্সিজেনেটর পৌঁছে দেওয়া হবে হাসপাতালগুলিতে। ৫০০০ ডলার সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তাদের।

অন্য দিকে, শনিবারই বিহারের প্রত্যন্ত এলাকায় সাহায্য পৌঁছে দিতে ‘বিহার এড’ নামে এক তহবিল গড়ে অর্থ সংগ্রহের কাজ শুরু করেন বন্দনা কর্ণ নামে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান মহিলা। যাতে এক দিনেই ব্যাপক সাড়া মিলেছে। দশ হাজার ডলার লক্ষ্যমাত্রার প্রায় আট হাজার ডলার এক দিনেই উঠে এসেছে বলে জানান বন্দনা। এই টাকা দিয়ে অক্সিজেন ফ্লো মিটার, অক্সিজেন সিলিন্ডার, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, পাল্‌স অক্সিমিটার, পিএসএ এবং সেন্সর লাগানো স্যানিটাইজ়ার মেশিন বিহারের প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।