‘লকডাউনে’ আরও ৭ হাজার কোটি টাকা যোগ হলো বাজার মূলধনে

SHARE

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন (কঠোর বিধিনিষেধ) জারি করেছে সরকার। এই বিধিনিষেধের মধ্যে বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে দেশের শেয়ারবাজার। গেল সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। এতে লকডাউনের চার সপ্তাহে বাজার মূলধন প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা বাড়ল।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গেল সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবস শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকে। এতে সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। সেই সঙ্গে বেড়েছে সবকটি মূল্য সূচক। পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে।

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ৭০ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা।

আগের তিন সপ্তাহেও বড় অঙ্কের মূলধন বাড়ে বাজারটিতে। আগের তিন সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ১১ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা। এই হিসাবে লকডাউনের চার সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ল ১৮ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে।

এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২৬ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩১ শতাংশ। আগের তিন সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২২৪ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট। অর্থাৎ, টানা চার সপ্তাহের উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বাড়ল ৩৫১ দশমিক ২৪ পয়েন্ট। অবশ্য তার আগের চার সপ্তাহ টানা এই সূচকটি কমে। আগের চার সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমে ৩১৪ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি লকডাউনের চার সপ্তাহেই বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গেল সপ্তাহে এই সূচকটি বেড়েছে ২৬ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। আগের তিন সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১২০ দশমিক ৫২ পয়েন্ট। এই হিসাবে লকডাউনের চার সপ্তাহে এই সূচকটি বাড়ল ১৪৬ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট।

অপরদিকে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচকও লকডাউনের চার সপ্তাহেই বেড়েছে। গত সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছে ২ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বা দশমিক ১৯ শতাংশ। আগের তিন সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৫২ দশমিক ১৬ পয়েন্ট। এই হিসাবে চার সপ্তাহের টানা উত্থানে সূচকটি বাড়ল ৫৪ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট।

সবকটি মূল্য সূচকের উত্থানের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৫৪টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৯টির। আর ৪৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩৬১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ১ হাজার ৬৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ, প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২৯৭ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ২৭ দশমিক ৯১ শতাংশ।

আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৬ হাজার ৮০৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৫ হাজার ৩২২ কোটি ১৯ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ৪৮৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বা ২৭ দশমিক ৯১ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বেক্সিমকো, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ন্যাশনাল ফিড, রবি, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, ম্যাক্সন স্পিনিং, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো।