লকডাউনে জরুরি সেবা ছাড়া সব বন্ধ থাকবে

SHARE

সীমিত পরিসরে অফিস, দোকান পাট ও গণপরিবহন চালু রেখে এক সপ্তাহের (৫-১১ এপ্রিল) চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না, বরং তা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলছে। এ অবস্থায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী ১৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউন দিতে যাচ্ছে সরকার।

এ বিষয়ে শুক্রবার (৯ এপ্রিল) আগাম ইঙ্গিত দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অভিন্ন সুরে কথা বলেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও।

করোনার সংক্রমণরোধে এক সপ্তাহের সীমিত লকডাউন চলছে। তা শেষ হতেই আরও এক সপ্তাহের জন্য কঠিন লকডাউনে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সর্বাত্মক এই এক সপ্তাহের কঠিন লকডাউন কেমন হবে? এ সময় অফিস আদালত খোলা থাকবে কিনা, দোকানপাট, কাঁচাবাজার, গণপরিবহন, কল-কারখানা, গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান চালু রাখা হবে কিনা, সবকিছু নিয়ে এখন থেকেই চলছে জল্পনা-কল্পনা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মানুষ বাঁচাতে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন, বলতে গেলে এটা কমপ্লিট লকডাউন। মানুষ বাসাবাড়ির বাইরে বেরুতে পারবে না। অতিপ্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে আসতে পারবে না, এটা যেকোনো মূল্যে নিশ্চিত করা হবে।

তিনি বলেন, জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে। প্রাইভেট যান ও গণপরিবহন চলবে না। দোকানপাট, মার্কেট কোনো কিছুই খোলা হবে না। সবকিছুই বন্ধ থাকবে। সবকিছু কঠোর লকডাউনের আওতাধীন থাকবে। শিল্প-কারখানা, গার্মেন্টস এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে। মানুষ যে যেখানে আছেন, সেখনেই থাকবেন। একজেলা থেকে অন্য জেলায় কেউ যেতে পারবে না। কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করা হবে। সংক্রমণ রোধে প্রত্যেক মানুষকে কঠিন এই লকডাউন মানতে হবে।

সংক্রমণ রোধ করতে হলে মানুষকে ঘরে থাকতে হবে জানিয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে আসতে পারবে না- এটা এবার নিশ্চিত করা হবে। সবাইকে সংযত আচরণ করতে হবে। পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে হবে। সরকারের সিদ্ধান্ত সুবিবেচনার সঙ্গে নিতে হবে। আর একটি মানুষও যাতে সংক্রমিত না হন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে সবাইকে ঘরে থাকবে হবে।

হঠাৎ কঠিন লকডাউন কেনো- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সীমিত চলাচলের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও মানুষ কারণে-অকারণে বাইরে যাচ্ছে। করোনার বিষয়ে অসচেতন। এ কারণে সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলছে। করোনার উর্ধ্বমুখী এই সংক্রমণ ঠেকাতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মানুষ বাঁচাতে কঠোর পদক্ষেপ এর অংশ হিসেবে আমরা এক সপ্তাহের জন্য কঠিন লকডাউন দিতে যাচ্ছি।

করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে একদিন আগে বিসিএস ক্যাডারদের একটি অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মানুষের জীবন বাঁচাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শুক্রবার সকালে সরকারি বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশে করোনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। কিন্তু এতেও জনগণের উদাসীনতা কমেনি। এ অবস্থায় জনস্বার্থে সরকার আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা ভাবনা করছে।

করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় গত ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন বা কঠোর বিধি-নিষেধ জারি করে সরকার। এই বিধি-নিষেধের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১১ এপ্রিল রাত ১২টায়। বিধি-নিষেধের সময়ে অবশ্যই পালনীয় ১১টি নির্দেশনা দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গত ৪ এপ্রিল প্রজ্ঞাপনি জারি করা হয়।