ভারতে ষষ্ঠ দফায় ১১৭ আসনে ভোটগ্রহণ চলছে

SHARE

image_78385_0ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ষষ্ঠ দফায় ১২ রাজ্যে ১১৭টি আসনে ভোটগ্রহণ চলছে।

বৃহস্পতিবারের এই ভোটগ্রহণের পরই নিশ্চিত হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। বিজেপির নরেন্দ্র মোদি অথবা কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী নাকি তৃতীয় শক্তির কোনো নেতানেত্রী।

১২টি রাজ্যের মোট ১১৭টি লোকসভা আসনে এ দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব আসনে কংগ্রেসের প্রভাব রয়েছে এমন রাজ্যগুলো হলো- আসাম (ছয়টি), ঝাড়খণ্ডে (চারটি), মহারাষ্ট্রে (১৯টি), পশ্চিমবঙ্গের (ছয়টি) ও পণ্ডিচেরির একটি আসন। বিজেপির প্রভাব রয়েছে এমন রাজ্যগুলো হলো- ছত্তিশগড়ে (ছয়টি), মধ্যপ্রদেশের (১০টি), রাজস্থানের (পাঁচটি), উত্তর প্রদেশের (১২টি) আসন।

তবে উত্তর প্রদেশে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে আঞ্চলিক দল মুলায়েম সিং যাদবের সমাজবাদী পার্টি ও মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি। তেমনি পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস ছাড়া তৃণমূল কংগ্রেস অত্যন্ত শক্তিশালী। এখানকার ফলের ওপর নির্ভর করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের পরে জাতীয় স্তরে নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারবেন কি-না।

একইভাবে তামিলনাড়ূর সবকটি আসনে ভোট চলছে। এখানকার ৩৯টি আসনের ওপর নির্ভর করবে তামিলনাড়ূর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা দিল্লর কুর্সির দাবিদার হতে পারবেন কি-না।

জনমত জরিপগুলো এরই মধ্যে জানিয়েছে, মমতা-মায়াবতী অথবা মুলায়ম সিং ও জয়ললিতার সমর্থনের ওপর নির্ভর করবে দিল্লির মসনদে কে বসবেন। বিহারে বিজেপি ছাড়াও এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে কংগ্রেস সহযোগী লালু প্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল।

ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বিহারে নরেন্দ্র মোদির প্রভাব অনেকটাই রুখে দিয়েছেন লালুপ্রসাদ যাদব। ফলে উত্তর প্রদেশ ও বিহারের মিলিত ১২০টি আসনের মধ্যে বিজেপি একতরফা জয়ী হতে পারছে না। ফল ত্রিশঙ্কু হওয়ার সম্ভাবনা।

আজকের ভোটের পর ভারতের ১৭ রাজ্যের সবক’টি লোকসভা আসনে ভোটপর্ব সম্পন্ন হবে। ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ৩৪৪টির ভোটপর্ব শেষ হবে। বাকি থাকবে অন্ধ্র, উত্তর প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গসহ বাকি রাজ্যের ১৯৪টি আসনের ভোট। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং আসাম রাজ্যের ভোটার বলে আজ গৌহাটিতে ভোট দিতে যাবেন।

আজকের ভোটের গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন-উত্তর প্রদেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ, সমাজবাদী পার্টি নেতা মুলায়ম সিং যাদব, কেন্দ্রীয় ইউপিএ সরকারের মন্ত্রী মিলিন্দ দেওরা (মুম্বাই), জিতেন্দ্র সিং (রাজস্থান), তারিক আনোয়ার (বিহার), নমোনারায়ণ মিনা (রাজস্থান)। রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের বিদিশায় লোকসভার বিরোধী নেত্রী বিজেপির সুষমা স্বরাজ, পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গিপুরে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিত মুখার্জি, মথুরায় বলিউড অভিনেত্রী হেমা মালিনি (বিজেপি) ও রাজস্থানে ভারতের সাবেক ক্রিকেট ক্যাপ্টেন মো. আজহারউদ্দিন (কংগ্রেস)।

পশ্চিমবঙ্গের রায়গঞ্জ কেন্দ্রে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুনসি, মালদহের দুটি কেন্দ্রে এএইচ খান চৌধুরী (কেন্দ্রীয় মন্ত্রী) ও পশ্চিমবঙ্গ যুব কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম নুর। মুম্বাইয়ের একটি কেন্দ্রে প্রার্থী বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের বোন প্রিয়া দত্ত (কংগ্রেস) ও আম আদমি পার্টির সমাজসেবী মেধা পাটেকর।

মুলায়ম সিং যাদবের বিরুদ্ধে কংগ্রেস কোনো প্রার্থী দেয়নি।সব রাজ্য মিলিয়ে দুই হাজার ৮৭ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন প্রায় ২০ কোটি ভোটার। ফলে মোট ৮১ কোটি ভোটারের মধ্যে ৫০ কোটির ভোটদান আজই শেষ হবে।

তামিলনাড়ূতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা দুই আঞ্চলিক দল ডিএমকে ও এআইএডিএমকের মধ্যে। এখানে কংগ্রেস একা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস নেতা মনিশংকর আয়ার ও অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের ছেলে কার্তি। অর্থমন্ত্রী এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। এই প্রথম বিজেপি দক্ষিণ তামিলনাড়ূর তিনটি ছোট আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট বেঁধেছে। সবারই লক্ষ্য এখানে বিজেপি আদৌ কোনো আসনে জয়ী হতে পারে কি-না।

কাশ্মীরের অনন্তনাগ আসনে আজ ভোট গ্রহণ চলছে। এখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়াত ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছে। ফলে লক্ষ্য থাকবে ভারতের অন্য রাজ্যের মতো কাশ্মীরের ভোটাররা অংশগ্রহণ করেন কি-না। এখানে প্রার্থী পিডিপির মেহবুবা মুফতি। প্রতিদ্বন্দ্বিতা সরাসরি ফারুক আবদুল্লাহর ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে পিডিপির। পণ্ডিচেরির একটি আসনে কংগ্রেস প্রার্থী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি নারায়ণ স্বামী।