‘মেয়ে মাদকাসক্ত’, জানতেন পামেলার বাবা! এবার পার্লারে পুলিশের তল্লাশি

SHARE

মাদক তদন্তে নেমে তল্লাশি শুরু পামেলা ভারতের আলিপুরে বিজেপি নেত্রী গোস্বামীর বিউটি পার্লারে। পুলিশের মতে, ওই পার্লারে আরও মাদক লুকিয়ে রাখা আছে, অথবা, সেখানে রেভ পার্টি চলত কি না, তা জানতেই এই তল্লাশি। এ ছাড়াও ওই পার্লারে কারা যাতায়াত করতেন, তা জানতেও চলছে ধৃতদের জেরা। পার্লার ও নিউ টাউনের শপিং মলের সিসিটিভির ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে।

গত শুক্রবার নিউ আলিপুরে বিজেপির যুবনেত্রী পামেলা গোস্বামী ও তাঁর সঙ্গী বিজেপির যুবনেতা প্রবীর দে’কে ৭৬ গ্রাম কোকেন-সহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, সাম্প্রতিককালে এত বেশি পরিমাণ বিদেশি মাদক একসঙ্গে উদ্ধার হয়নি। গ্রেপ্তারির সময় ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। তাতেই প্রমাণ মিলেছে যে, পামেলার হ্যান্ডব্যাগ ও গাড়ির মধ্যে থেকে উদ্ধার হয়েছে কোকেন। ওই মাদক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, কলকাতা পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে এই বিদেশি মাদক উদ্ধারের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছে নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো।

পামেলা গোস্বামী ও প্রবীর দে পুলিশ হেফাজতে আসার পর তাঁদের জেরা করতে শুরু করেন নিউ আলিপুর থানার আধিকারিকরা। শনিবার রাতেই পুলিশ হানা দেয় নিউটাউনের একটি শপিং মলে। এই মলেই রয়েছে পামেলা ও প্রবীরের বিউটি পার্লার। কিন্তু রাতে বিউটি পার্লারের সামনে গিয়েই থমকে যায় তদন্ত। কারণ, প্রবীর বা পামেলা কারও কাছেই চাবি ছিল না। তাঁরা জানান, চাবি রয়েছে পার্লারের এক কর্মচারীর কাছে। রাত দু’টো নাগাদ ওই কর্মচারীর বাড়িতে হানা দিয়ে ওই চাবির সন্ধান পান পুলিশ আধিকারিকরা। রবিবার দুপুরে পুলিশ পামেলা, প্রবীর ও কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে ওই বিউটি পার্লারে হানা দেয়। তল্লাশি শুরু হতে ফের ‘চাবি বিভ্রাট’। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ভিতরে রয়েছে প্রচুর ড্রয়ার ও আলমারি। বেশ কিছু বাক্সও রাখা আছে, সেগুলি সন্দেহজনক বলে দাবি পুলিশের। সেই ড্রয়ার ও বাক্সগুলি লক করা। কর্মচারীর দাবি, তাঁর কাছে সেগুলির চাবি নেই। তাই পুলিশ বাকি চাবিগুলির সন্ধান চালাচ্ছে। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, যদি চাবি না উদ্ধার হয়, তবে ড্রয়ারও পুলিশ ভাঙতে পারে। ওই পার্লারের ভিতর কয়েকটি বেডের সন্ধান মিলেছে। ফলে সেখানে ম্যাসাজ হত কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পুলিশ আধিকারিকরা। সেই ক্ষেত্রে কারা এই পার্লারে যাতায়াত করতেন, তা জানতে সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ব্যাপারে তথ্য পেতে পুলিশ প্রবীর ও পামেলাকে জেরা করছে। প্রয়োজনে এই তথ্যগুলি বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ অফিসারদেরও দিতে পারেন নিউ আলিপুর থানার আধিকারিকরা।

এদিকে, জেরার সময় পামেলা ও প্রবীর দু’জনই দাবি করেন যে, তাঁদের গাড়িতে এক যুবক ছিলেন। বিধানসভা ভোটের টিকিট পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ওই যুবক পামেলা ও প্রবীরকে নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবেন বলেন। এই মাদকচক্রের সঙ্গে ওই যুবকের যোগ রয়েছে কি না, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে। এ ছাড়াও পামেলার বাড়ি বা পার্লারে রেভ পার্টিতে কোকেন ব্যবহার হত কি না, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে। গতবছর লালবাজারে প্রবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে পামেলার বাবা বলেছিলেন যে, প্রবীর তাঁর মেয়েকে মাদক খাওয়ায়। পুলিশের ধারণা, পামেলা ও প্রবীর দু’জনেই বিভিন্ন ধরনের মাদক নিতেন। তাঁরা কাদের মাদক সরবরাহ করতেন, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।