টকশোতে উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী

SHARE

hasina parlamentযারা টেলিভিশনের টক শোতে ‘উসকানিমূলক’ কথা বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  বুধবার সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র সাংসদ হাজি সেলিমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

যারা টক শোতে নাশকতার পক্ষে ‘সুড়সুড়ি’ দেন তাদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না, হাজি সেলিমের এই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “যারা টক শোতে সরকারের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক কথা বলেন, তাদের মনিটর করা হবে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের ব্যাপারটাও আমরা দেখব। তবে সরকারের সমালোচনা করা যাবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা টক শোতে নানান কথা বলেন, তাদের বলতে চাই, তারা কি একবারও বার্ন ইউনিটে পোড়াদের দেখতে খোঁজ নিয়েছেন, দেখতে গিয়েছেন?”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রাইভেট চ্যানেলগুলো থেকে টক শোয়ের মাধ্যমে তারা পেট্রলবোমা মারা বন্ধ করতে বলুক। তারা ভাবছে, কয়েক দিন পর কিছু একটা হবে। কী হবে? অন্যর ওপর নির্ভর না করে নিজেরা কিছু করেন।”

শেখ হাসিনা বলেন, “পেট্রলবোমায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের সহায়তা দেওয়া হবে। মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। খেটে খাওয়া মানুষের জন্য কাজ করব। দেশের অন্য হাসপাতালে টাকা পাঠানো হচ্ছে। মানুষ পুড়ে অঙ্গার হয়ে যাচ্ছে, সেদিকে তার (খালেদা) খেয়াল নাই।”

আরাফাত রহমান কোকো মারা যাওয়ার পর ড. কামাল হোসেন ও মাহামুদুর রহমান মান্নার খালেদা জিয়ার বাসায় শোক জানাতে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তারা শোক জানাতে গেলেন, এসএসসি পরীক্ষার এক দিন আগে। আমি ভেবেছিলাম তারা পরীক্ষার সময় হরতাল–অবরোধ প্রত্যাহারে খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করবেন। কিন্তু না, হরতাল প্রত্যাহারের কথা তারা বললেন না, বার্ন ইউনিটে পুড়ে যাওয়া মানুষের কথা একটিবারও তারা বললেন না।”

এর আগে আবদুল মতিন খসরুর প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ কী অপরাধ করেছে? মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে না। ছোট ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিতে পারবে না। পেট্রলবোমার ভয়ে বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না। একটা বছর মানুষ শান্তিতে ছিল, মানুষের শান্তি দেখে খালেদা জিয়া অশান্তিতে থাকেন। এগুলোর জন্য উনার বিচার হবে।”

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি ও জামায়াত যা করছে, তা কোনো রাজনীতি না। এত মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, তার (খালেদা জিয়া) কোনো কষ্ট নাই। নিজের ঘর ছেড়ে উনি কার্যালয়ে আছেন, আবার কাঁটাতার দিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত করছেন জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য। মানুষ আক্রমণ করতে পারে ভেবে উনি নিজেকে সুরক্ষিত করছেন। উনি জঙ্গিনেতা, উনি দস্যুবৃত্তি করে বেড়াচ্ছেন। বাংলা ভাই উনার সৃষ্টি, বাংলা ভাইয়ের মা খালেদা। বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চান উনি। খালেদা জিয়া যা করছেন, এটা রাজনীতি নয়।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা পেট্রলবোমা ছুড়ছে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দ্রুত তাদের বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “খালেদা জিয়ার মানুষ খুনের ব্যাপারে আগ্রহ আছে। ভোটেই তার সমস্যা, গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে আমি ফোন করেছিলাম। আমরা সর্বদলীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানাই। সে সরকারে তারা যদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চান, সেটা দিতেও রাজি ছিলাম। কিন্তু দেশবাসী জানে ফোনে উনি কী বলেছেন। আসলে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে না যাওয়ার কারণ একটাই, জামায়াত নিবন্ধিত দল না হওয়ায় নির্বাচন করতে পারবে না। তাই উনিও যাবেন না।”