আমাদের স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

SHARE

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ১৯৪৮ থেকেই কিন্তু সংগ্রামের শুরু, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। …তবে বিজয়ী জাতি হিসেবে কেন মানুষের কাছে আমরা হাত পেতে চলবো। তাই আমাদের স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে।

আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

যারা স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা প্রতিটি ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। প্রতিবছর ২৫ মার্চ আমরা এ পুরস্কার দিয়ে থাকি। এবার করোনার কারণে সেটা হলো না। জাতির জনকের জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানও জনসমাগম না করে করার চেষ্টা করলাম। তবে করোনার মধ্যেও আজ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ। আমি বলেছি, যেহেতু স্বাধীনতা পুরস্কার, যেভাবেই হোক পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে তুলে দিতে হবে।

দেশকে ডিজিটাল করার কথা তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ ডিজিটাল হয়েছে বলেই আমি সেখানে না থেকেও ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকতে পারছি।

সরকারপ্রধান বলেন, একটি স্বাধীন হিসেবে গড়ে তোলার এমন কোনো কাজ নেই যা বঙ্গবন্ধু করেননি। কিন্তু তাকে সপরিবারে হত্যা করা হলো। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেই বিচার বন্ধ করে দেয়, যারা জেলে ছিল তাদের মুক্তি দেয়, যারা পাকিস্তানে ছিল তাদের ফিরিয়ে আনে। পুরস্কৃত করে চাকরি দিয়ে। যে ৭ মার্চের ভাষণ মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল তা নিষিদ্ধ করা হয়। স্বাধীনতার কথা আসলেই এই বিষয়গুলো মনে পড়ে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যেন স্বাধীন জাতি হিসেবে মর্যাদা নিয়ে চলতে পারি। বাংলাদেশকে আমরা দারিদ্র্যমুক্ত করব, উন্নত-সমৃদ্ধ করব। করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বের মানুষকে স্থবির করে দিয়েছে। মানুষ যেন রক্ষা পায়, অর্থনৈতিক গতিশীলতা যেন থাকে। দেশের মানুষের সব মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। সারাবিশ্বই যেন করোনা ভাইরাসের হাত থেকে মুক্তি পায়। সবাইকে এখনই সর্তক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। যা যা প্রয়োজন ব্যবস্থা নিচ্ছি।

সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের ধাক্কা আমাদের দেশেও আসে। সে জন্য এখনই প্রস্তুতি নিন। জেলায় জেলায় হাসপাতালে প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। অনেক চিকিৎসক নার্স নিয়োগ দিচ্ছি। আপনারাও সচেতন থাকুন।

জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে স্বাধীনতা পদক দেওয়ার কর্মসূচিটিও স্থগিত করা হয়েছিল, যা আজ ভূষিতদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন। পদক প্রদান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন স্যাটেলাইট টেলিভিশন, রেডিও, অনলাইন সরাসরি সম্প্রচার করে।

এ বছর পুরস্কার পেয়েছেন- স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের জন্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দাস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, প্রয়াত কমান্ডার (অব.) আবদুর রউফ, প্রয়াত মুহম্মদ আনোয়ার পাশা ও আজিজুর রহমান। চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. এ কে এম এ মুক্তাদির। সংস্কৃতিতে কালীপদ দাস ও ফেরদৌসী মজুমদার।

এ ছাড়া শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমস্ এবার স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছে।