প্রতিটি ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর : প্রধানমন্ত্রী

SHARE

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দেশের প্রতিটি ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা দুর্যোগে খাদ্য উৎপাদনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। উৎপাদনে কৃষক যাতে উৎসাহ না হারায় সেজন্য প্রণোদনা দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে মানুষ যেন কষ্ট না পায় সেদিকে লক্ষ্য করে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। খাদ্যের সঙ্গে পুষ্টি যেন নিশ্চিত হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।

গবেষণা করে উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে মাছ-মাংস, ডিম, তরি-তরকারি ও সবজির দাম মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার নিশ্চয়তা দিচ্ছেন বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ। এ মানুষদের খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়াটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেই লক্ষ্যে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি এবং বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আমরা এখন কৃষক যাতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সব ধরনের সহযোগিতা পায় সে জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, মোবাইল ফোন আগে মানুষের হাতে ছিল। আমি উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। আমার কৃষকের হাতেও এখন মোবাইল ফোন।

তিনি বলেন, প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ কৃষক উপকরণ কার্ড পাচ্ছে। এই কার্ডগুলো তাদের দিয়ে দিই। তাদের টাকাগুলো সরাসরি তাদের অ্যাকাউন্টে চলে যায়। দশ টাকায় তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টি নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজর দিয়েছি। সে জন্য মাছ-মাংস, ডিম, তরি-তরকারি ও সবজি উৎপাদন গবেষণা করে করে বাড়িয়ে তা যেন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার আওতায় থাকে সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস আজকে সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। যখনই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে, তখনই আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছি খাদ্য উৎপাদনে। আমরা নিশ্চিত করেছি যে, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, খাদ্য নিশ্চয়তা থাকতে হবে।

তিনি বলেন, একটি মানুষও না খেয়ে কষ্ট পাবে না, একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেকটা মানুষ চিকিৎসা সেবা পাবে, কোনো মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগবে না, আমাদের বিশাল সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা সহযোগিতা করছি। খাদ্যের সাথে সাথে পুষ্টির নিশ্চয়তা হয়, মানুষজন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়- সেটাই আমাদের লক্ষ্য। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ আমরা কায়েম করব।

শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা যাতে নিশ্চিত থাকে সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। প্রতিটি মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দরিদ্র যারা আমরা তাদের মাঝে বিনা পয়সায় খাবার বিতরণ করে যাচ্ছি, এটা আমরা অব্যাহত রাখবো। বাংলাদেশ সম্পর্কে আমাদের একটাই চিন্তা- জাতির পিতা চেয়েছেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে, আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ আমরা তা অর্জন করতে পারব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত সাহসী, তারা যেকোনো পরিস্থিতির মোকাবিলা করার ক্ষমতা রাখে। আমরা করোনার সাথে সাথে ঝড়-বন্যা সবই মোকাবিলা করে যাচ্ছি। এভাবেই আমাদের বাঁচতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও কেউ ফেলে রাখবেন না, গাছ লাগান, ফল লাগান, তরিতরকারি লাগান যে যা পারেন কিছু লাগিয়ে নিজের উৎপাদন বাড়ান।

তিনি বলেন, আজকে আপনারা জানেন করোনাভাইরাস সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। যখনই করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে তখনই আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি খাদ্য উৎপাদনে। আমাদের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে, খাদ্যের নিশ্চয়তাটা থাকতে হবে। কারণ, করোনা ভাইরাসের কারণে সমগ্র বিশ্বে স্থবির একটা দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে যেন তার প্রভাব না হয়, আমাদের দেশের মানুষ যেন কোনোরকম কষ্ট ভোগ না করে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছি। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।

সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের মহাব্যবস্থাপক কিউ ইউ ডনিউ ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দেন।

গণভবন প্রান্তে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।