মিয়ানমারের বিরুদ্ধে শাহবাগে রাখাইনদের বিক্ষোভ

SHARE

মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশে বসবাসরত রাখাইন সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি সংগঠন। নজিরবিহীন এই বিক্ষোভে রাখাইনে বৌদ্ধদের হত্যা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করেন এসব সংগঠনের নেতারা। এজন্য তারা মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানান।

আজ রোববার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত এই মানববন্ধনে ১০টি সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের সামগ্রিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। আরাকান রাজ্যের রাখাইনে সাধারণ মানুষের ওপর দেশটির সেনাবাহিনী ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ, বসতবাড়ির ওপর বিমান হামলা, জাহাজ থেকে ভারী বোমা নিক্ষেপ এমনকি নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করছে। যা মানবতাবিরোধী অপরাধ।

রাখাইনের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে বক্তারা বলেন, রাখাইন প্রদেশে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ। সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিচ্ছিন্ন করে তারা গণহত্যার বিষয়টি গোপন করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালে ইন্টারনেট সেবা চালু রাখার নির্দেশনা দিলেও সেটি অমান্য করে চলেছে মিয়ানমার। তারা কৌশলে এবং পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন গ্রামে ঢুকে নির্যাতন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, গুলিবর্ষণসহ বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনসহ উসকানিমূলক নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক কোনো বিধিনিষেধ তারা মানছে না। কাউকে তোয়াক্কা করছে না।

বক্তারা বলেন, আরাকানে সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন হামলায় এখন পর্যন্ত ৩০০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ছয় শতাধিক আহত হয়েছেন। পাশাপাশি ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে উদবাস্তু জীবনযাপন করছে। আমরা এই মানববন্ধন থেকে ইউরোপিয়ান কমিশন, রাশিয়া, চায়না ও এশিয়ান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করতে চাই। এমন অত্যাচারের বিরুদ্ধে এখনই যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে রাখাইন প্রদেশের জনগণ অচিরেই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ রাখাইন স্টুডেন্স অ্যাসোসিয়েশন, রাখাইন কালচারাল গ্রুপ (কক্সবাজার, বাংলাদেশ), জাতীয় পরিবেশ ও মানবাধিকার সোসাইটি, রাখাইন ইয়ুথ ইউনাইটেড অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ, রাখাইন ওমেন অর্গানাইজেশন, রাখাইন কমিউনিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ স্টুডেন্স কাউন্সিল, কক্সবাজার আর্ট ক্লাব, বাংলাদেশ রাখাইন ভিক্ষুক সংঘ, বুদ্ধিষ্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (ঢাকা) শাখার নেতাকর্মীরা অংশ নেন।