ফ্লয়েডকে হত্যাকারী সেই পুলিশ কর্মকর্তা জামিনে মুক্ত

SHARE

গলায় হাঁটু চেপে শ্বাসরোধ করে জর্জ ফ্লয়েড নামে কৃষ্ণাঙ্গ এক যুবককে হত্যা করার অভিযোগে অভিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সেই পুলিশ অফিসার কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

কোর্ট রেকর্ডে দেখা যায়, বুধবার ১০ লাখ ডলার মুচলেকার বিনিময়ে ডেরেক চাওভিন নামে শ্বেতাঙ্গ সেই পুলিশ অফিসার মুক্তি পেয়েছেন।

জালিয়াতির অভিযোগে গত ২৫ মে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার রাস্তায় ফ্লয়েডের গলায় প্রায় আট মিনিট হাঁটু চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করে চাওভিন। মৃত্যুকালে ফ্লয়েডকে বেশ কয়েকবার বলতে যায়- ‘আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না।”

ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফেটে পড়ে বর্ণবাদ বিরোধী ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ গোটা বিশ্বে বারুতের মতো ছড়িয়ে পড়ে এই আন্দোলন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্দোলনকারীদের ওপর নিপীড়ন চালায় যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ। কিন্তু দমানো যায়নি। তারা দেশটির পুলিশবাহিনীতে সংস্কার আনাসহ বেশ কিছু দাবি তোলে আন্দোলন চারিয়ে যায়।

আন্দোলনের একপর্যায়ে গ্রেপ্তার করা হয় চাওভিনকে। ফ্লয়েডকে হত্যায় তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী তীব্রতর অভিযোগ সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডারের অভিযোগ আনা হয়। আগামী বছরের মার্চ মাসে তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর কথা।

ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকা চাওভিনের সঙ্গে থাকা আরও তিন পুলিশ অফিসার আলেক্সান্ডার কুয়েং, টমান ল্যান ও তু থাওকেও বরখাস্ত করা হয়। ফ্লয়েডকে হত্যায় চাওভিনকে সহযোগিতা করায় তাদের বিরুদ্ধে হত্যায় সহযোগিতা করার মামলা হয়েছে। তবে তারা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন আগেই।

ঘটনার চার মাসের বেশি সময় পর জামিনে মিলল চাওভিনের। এর মানে আগামী বছর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত মুক্ত থাকতে পারবেন তিনি।

মে মাসের শেষ দিকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে চাওভিন অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন মিনিয়াসোটার সুরক্ষিত ওক পার্ক হাইটসে। অবশ্য জামিনে মুক্তি পাওয়া নিয়ে চাওভিন বা তার কোনো আইনজীবীর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে এই জামিনের তীব্র নিন্দা করেছেন ফ্লয়েডের পরিবারের আইনজীবী বেন ক্রাম্প- “মাত্র ২০ ডলার নিয়ে জর্জ ফ্লয়েডের জীবন কেড়ে নেওয়ার পর ডেরেক চাওভিন আজ ১ মিলিয়ন ডলারের মুচলেকার বিনিময়ে সে তার মুক্তি কিনেছে।”

“মুচলেকায় তার মুক্তি জর্জ ফ্লয়েডের পরিবারকে সেই বেদনার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, তারা ন্যায্য বিচার পাওয়া থেকে এখনো অনেক দূরে।”