বরগুনায় ব্যবসায়ীদের হালখাতা শুরু হয়েছে আগে থেকে

SHARE

unnamedপহেলা বৈশাখকে ঘিরে সকল বাঙ্গালীরই নানা পরিকল্পনা ও আচারাদী থাকে। বছরের প্রথম দিনটি সবচেয়ে গুরুত্ব পায় বাঙ্গালী ব্যবসায়ীদের কাছে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা বাংলা বছরের হিসেব-নিকেশ করেই ব্যবসা পরিচালনা করেন। পুরনো বছরের শেষ মাস অর্থাৎ চৈত্র মাস থেকে শুরু হয় বকেয়া আদায়। বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখে বকেয়া আদায় করে নতুন খাতা খোলার রীতি শত বছরের। পহেলা বৈশাখের বকেয়া আদায় উৎসব ক্রেতা-বিক্রেতার সুহৃদ বন্ধন অটুট রাখে।
উপকূলীয় বরগুনা জেলার ব্যবসায়ীদের মধ্যে চৈত্র মাসের শুরু থেকেই নববর্ষ বরণ ও আচারাদি পালনের প্রস্তুতি শুরু হয়। শেষ মুহূর্তের ঝার-পোছ শেষ করে ফেলেছে। লালসালুর মলাট দেয়া নতুন খাতা শোভা পাচ্ছে ব্যবসায়ীদের গদি বা ক্যাশ টেবিলে। ইতোমধ্যে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে গেছে হালখাতার নিমন্ত্রণপত্র। ক্রেতারাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন বকেয়ার খাতা থেকে নাম কাটার।
বরগুনার বিশিষ্ট পুস্তক বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান সালেহিয়া লাইব্রেরী ও পাবলিকেশনস’র প্রধান সাইফুল্লাহ নাসির বলেন, নিজের প্রতিষ্ঠানে হালখাতা খুলেছি। পাশাপাশি এ পযর্ন্ত নানা ব্যবসায়ীদের কাছে কয়েক লাখ টাকার লালসালুর মলাট দেয়া হালখাতা এবং হালখাতা অনুষ্ঠানের ছাপানো কার্ড ও চিঠি বিক্রি করেছি।
হালখাতা অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখতে নতুন করে সাজানো হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। জ্বলে আলোক সজ্জা। আমন্ত্রিতদের বসার জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়। মিষ্টিমুখ করার জন্য থাকে ব্যাপক আয়োজন। সাউন্ড বক্সে বাজতে শুরু করেছে গান।
বরগুনা শহরের মুদি ব্যবসায়ী মো. হারুন অর রশিদ জানান অনেক ক্রেতা রয়েছে যারা সারা বছর বাকিতে মালামাল কেনেন। বছর শেষে হালখাতা অনুষ্ঠানে তারা পুরাতন সকল বকেয়া শোধ করেন। এরা কিন্তু আমাদের আত্মীয়ের মতো। বাড়িতে আত্মীয়-স্বজন এল যেমন আপ্যায়ন করি। এদেরও তেমনি আপ্যায়ন করতে হয়।
হালখাতা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাওয়া বেতাগী শহরের জসিম উদ্দিন জানান, পুরাতন খাতার নাম কেটে হালখাতায় নাম তোলার মধ্যে এক ধরনের মানসিক প্রশান্তি রয়েছে ।
আমতলী শহরের মা ড্রাগ হাউজের মালিক পরিতোষ রায় বলেন, শুধু বকেয়া পাওনার জন্যই নয়। বছরের প্রথম দিনে বন্ধু-বান্ধবদেরও নিমন্ত্রণ থাকে। ঈদ বা পুজোর মতো নববর্ষও আমাদের কাছে আনন্দমুখর একটা দিন।
আমতলী ডিগ্রি কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবুল হোসেন বিশ্বাস জানান, বাঙ্গালী হিসেবে পহেলা বৈশাখ আমাদের কাছে সার্বজনীন উৎসব। সকল শ্রেণী পেশার মানুষই এই দিনটি বিভিন্নভাবে আগ্রহে পালন করে। বছরের এদিনটি সকলেই ভালভাবে কাটাতে চান। মফস্বল এলাকায় মানুষের প্রাণের আন্তরিকতা নিয়ে পহেলা বৈশাখ কেটে যায়।