মাস্ক পরা নিশ্চিতে মার্কেট-শপিং মলে ‘আকস্মিক অভিযান’

SHARE

মাস্ক পরায় অনীহা দেখা দেয়ার প্রেক্ষাপটে মার্কেট ও শপিং মলগুলোতে অ্যাকশনে যাচ্ছে সরকার। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে আকস্মিক অভিযান পরিচালিত হবে ওইসব স্থানে।

আজ সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মাস্ক না পরা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কথা জানান।

‘যে কোনো দিন যে কোনো মার্কেটে’ পর্যবেক্ষণ চালিয়ে এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমি সম্প্রতি একটি কাজে একটি মার্কেটে গিয়েছিলাম, আমি সেখানে বেশি লোককে মাস্ক পরতে দেখিনি। পরে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, আমরা ক্রস চেক করব যে কোনো দিন, সে মার্কেটে যদি সবাইকে মাস্ক পরা না দেখি তাহলে উই উইল টেইক অ্যাকশন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মাস্ক ব্যবহার করা দরকার। সবাই মিলে ঠিকভাবে মাস্ক যদি ব্যবহার না করি তাহলে কিন্তু মুশকিল। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই তরফ থেকে যদি মাস্ক পরা থাকে তাহলে ৯৫-৯৮ শতাংশ নিরাপদ। আর এক তরফ থেকে মাস্ক থাকলে ৬০-৬৫ শতাংশ নিরাপদ। মাস্ক যদি না পরে তাহলে কিন্তু কোনো কিছুই সফল হবে না। এজন্য সবাইকে উদ্ভুদ্ধ করতে হবে।

কেউ মাস্ক কিনতে না পারলে বাড়িতে কাপড় দিয়ে সহজেই তা বানিয়ে নেওয়া যাবে বলে বিশেষজ্ঞদের মতামত তুলে ধরেন আনোয়ারুল। এই মহামারীর মধ্যে যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না- ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অনেক দেশে, বিশেষ করে শীতপ্রধান দেশে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নভেম্বরের শেষ থেকে ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ আসতে পারে, সেই প্রস্তুতি রাখতে হবে। সেজন্য মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডাকা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের যেন প্রস্তুতি থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন সেকেন্ড ওয়েভ যদি আসে… আমাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যদি সচেতন হই, তাহলে আমাদের জন্য এটা সুবিধা হবে। অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ঠাণ্ডার প্রকোপটা বাড়তে পারে। আমাদের লোকজনের নিউমোনিয়া, সর্দি, জ্বর বা অ্যাজমাটিক সমস্যা থাকে, সবাইকে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন (প্রধানমন্ত্রী)। এসবে আক্রান্ত হলে যেন চিকিৎসা করান।

কোভিড-১৯ এর ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ এলে মাঠ পর্যায়ে সেটাকে কীভাবে মোকাবেলা করতে হবে সেজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে সরকারপ্রধান নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে আনোয়ারুল বলেন, কাল বসে বিস্তারিত কর্মসূচি নেব।

‘লকডাউনের’ মত ব্যবস্থা আবার নেওয়া হবে কি না, সেই প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মাত্রাটা কেমন হবে আমরা তো জানি না। আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে। মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। ঠাণ্ডা থেকে প্রোটেকশন নিতে হবে। আর উপসর্গ দেখা গেলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

প্রসঙ্গত, হাটবাজার, দোকান-পাট ও শপিংমলে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনের পাশাপাশি শপিংমলে প্রবেশমুখে তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র এবং হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা ছাড়াও শপিংমলে আসা যানবাহনগুলোকে অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেসব নিয়ম পুরোপুরি মানা হচ্ছে না।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বাসার বাইরে সব জায়গায় সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে গত ২১ জুলাই একটি পরিপত্র জারি করা হলেও নানা অজুহাতে মানুষ তা এড়িয়ে যাচ্ছে।

সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ইতোমধ্যে সাড়ে তিন লাখ ছাড়িয়ে গেছে, মৃতের সংখ্যা পৌঁছে গেছে পাঁচ হাজারের কাছাকাছি।