প্লেনে চড়তে ভয় পেত সুশান্ত,ওঠার পর ওষুধ খেত : রিয়া

SHARE

সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর প্রথমবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন রিয়া। ১৪ জুন সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে নেটিজেনরা কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিল রিয়াকে। সুশান্তের শেষকৃত্যের রিয়ার অনুপস্থিতি ঘিরে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই সব প্রশ্ন সঠিক প্রমাণ করে ২৫ জুলাই রিয়া ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া, অভিনেতার টাকা আত্মসাত্ করবার অভিযোগ আনা হয়।

তবে ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে নিজের বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রিয়া। সুশান্ত মৃত্যু মামলার মূল অভিযুক্ত বলেন, ২০১৯ সালে তাঁর প্যারিস ট্রিপটি প্ল্যান করা হয়েছিল একটি কম্পানির পক্ষ থেকে, একটি ফ্যাশন শ্যুটের জন্য প্যারিস যাওয়ার কথা ছিল রিয়ার। তবে সুশান্ত নাকি জোর করে সেইসময় প্রেমিকার সঙ্গে সময় কাটাতে চেয়েছিলেন। নিজের এই দাবির সমর্থনে সব প্রমাণ তাঁর কাছে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রিয়া।

রিয়া বলেন, ‘সুশান্ত ভেবেছিল এটা একটা দারুন আইডিয়া হবে, আমরা ইউরোপে একটা ভালো সময় কাটাতে পারব। সেইজন্য ও আমার টিকিট বাতিল করেছিল – আমার কাছে সেই টিকিটও রয়েছে, যদি আমাকে প্রমাণ দেখাতে হয়.. এরপর ও নিজে আমাদের ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট বুক করে এবং ট্রিপের বাকি খরচ, যেমন হোটেলের খরচ সবকিছু ও দিয়েছিল। ও চেয়েছিল দিতে, এবং সেটা নিয়ে আমারও কোনও সমস্যা হয়নি। তবে হ্যাঁ, আমি চিন্তায় ছিলাম যে বড্ড বেশি টাকা ও খরচ করছে। আমার মনে হয়েছিল বড্ড বিলাসবহুল হয়ে যাচ্ছে ব্যাপারটা’।

এরপর রিয়া যোগ করেন, ‘কিন্তু শেষমেষ এটা ওর ব্যাপার, ও রাজার হালেই বাঁচতে ভালোবাসত’। তিনি বলেন, কোনওভাবেই সুশান্তের পয়সা নষ্ট করা কিংবা সুশান্তের নাম ব্যবহার করে জনপ্রিয় হওয়ার কোনও মানসিকতা তাঁর ছিল না। রিয়া আরও বলেন সুশান্ত ওর ছয়জন পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে থাইল্যান্ড গিয়েছিল প্রাইভেট জেটে এবং ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করে। ‘এটাই ওর লাইফস্টাইল ছিল, এটা ওর সিদ্ধান্ত’।

সুশান্তের মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হওয়া নিয়েও মুখ খোলেন রিয়া। রিয়ার পক্ষ থেকে এবং মুম্বাই পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনের শিকার ছিলেন সুশান্ত। যদিও সুশান্তের মানসিক অবসাদের ব্যাপারে কিংবা সুশান্তের চিকিত্সার ব্যাপারে পরিবারের কাছে কোনও তথ্য ছিল না। বরং তাঁদের তরফে অভিযোগ আনা হয়, রিয়া তাঁকে ড্রাগ দিয়েছেন, সুশান্তের অজান্তে।

সুশান্তের বাবার আইনজীবী বিকাশ সিং জানিয়েছেন, পরিবার প্রথমে ভেবেছিল প্রেসক্রাইব করা ওষুধের ওভারডোজের কারণে সুশান্ত অসুস্থ হয়। তবে রিয়ার মাদক যোগ সংক্রান্ত খবর সামনে আসবার পর গোটা ঘটনা পাল্টে গেছে। রিয়াকে নিষিদ্ধ ড্রাগেরও ব্যবহার করত সে সম্পর্কে পরিবারের কোনও ধারণাই ছিল না। কারণ তাঁরা এই ড্রাগ সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে একেবারেই পরিচিত নয়। নিষিদ্ধ ড্রাগের ব্যবহার করলে রিয়ার উপর ‘খুন’ এর অভিযোগ আরোপ করা হবে সেকথাও জানান বিকাশ সিং।

রিয়া দাবি করেন ২০১৯ এর সেপ্টেম্বরে যখন ইউরোপ ট্রিপের জন্য তাঁরা পারি দিচ্ছিলেন, সেই সময় সুশান্ত প্লেনের উঠবার পর কিছু মেডিসিন নিয়েছিল। রিয়া বলেন, সুশান্ত আমায় জানায় উড়বার সময় ও ক্লস্ট্রোফোবিক। মোডাফিনিল (Modafinil) নামের একটা ওষুধও ওকে প্রেসক্রিবশন ছাড়াই খেতে দেখেছিলাম। তার মানে ওটা ও আগে থেকেই খেত’। এরপর প্যারিসে গিয়ে নাকি তিনদিন হোটেলের রুম থেকেই বের হয়নি সুশান্ত। যা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তিনি, বলে জানান রিয়া চক্রবর্তী।

গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে সুশান্ত মামলার তদন্তে সবুজ সংকেত পাওয়ার পর দ্রুত গতিতে এই মামলার তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সিবিআই। সুশান্ত সিং রাজপুত মামলার মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই প্রমাণ খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে তিনটি কেন্দ্রীয় সংস্থা-সিবিআই, ইডি এবং নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। অভিযুক্ত নায়িকার বিরুদ্ধে ড্রাগ পাচার এবং ড্রাগের ব্যবসা করবার অভিযোগেও উঠেছে। হিন্দুস্তান টাইমস