ড্রিল মেশিন দিয়ে ফুটো করে চিকিৎসা, ৭ জনের জেল-জরিমানা

SHARE

jeljorimanaদেয়াল ফুটো করার মেশিন (ড্রিল মেশিন) দিয়ে ফুটো করা হতো শরীরের হাড়। চিকিৎসকের নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান। অথচ তারা এভাবেই রাজধানীর বাবর রোডে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। শনিবার র‌্যাব-২ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে চিকিৎসালয়টি সিলগালা করেন। তাৎক্ষণিকভাবে সাতজনকে জেল-জরিমানা করা হয়।

আসামিরা হলেন- পিরোজপুরের বাবুল চন্দ্র পাইক(৪২), রতন কৃষ্ণ মজুমদার(৪৩) ও অন্তরা শিকদার(২৯); যশোরের ইমাম হাসান (২২), শরিয়তপুরের জুয়েল মিয়া (২২), খুলনার মাসুম বিল্লাল (২২), এবং গোপালগঞ্জের শোভা বনিক (২৫)।

তাদের প্রথম দুজনকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অন্যদের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএইচএম আনোয়ার পাশা।

ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার পাশা জানান, অভিযানের সময় দেখা যায় জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতালের (পঙ্গু হাসপাতাল) কাছে ১৬/১৪ বাবর রোডের ছয় তলা ভবনের তিন তলায় এ হাসপাতালটি গড়ে তোলা হয়েছে। গভীর রাতে এ হাসপাতালের মালিক পাইক বাবু এবং তার ভায়রা রতন কৃষ্ণ মিলে ডাক্তার ছাড়া নিজেরাই রোগীদের এনেসথেসিয়া এবং অপারেশন করে।

গোপনে খবর পেয়ে শুক্রবার রাতব্যাপি সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় রতন কৃষ্ণ স্বীকার করেন, তিনি রোগীর পায়ের হাড় ড্রিল মেশিন দিয়ে ফুটো করে টানা দেয়ার কাজটি করে থাকেন। তিনি যে ড্রিল মেশিন দিয়ে রোগীর পা ফুটো করেন সেটি হার্ডওয়ারের দোকান থেকে কিনে এনেছেন। এর গায়ে লেখা রয়েছে ৩৫০০ আরপিএম অর্থ্যাৎ এটি মিনিটে ৩৫০০ বার ঘুরবে।

র‌্যাব জানায়, রতন পাঁচ বছর আগে খুলনায় ইলিশ মাছের ব্যবসা করতেন। ব্যবসা ছেড়ে ভায়রার হাসপাতালে ওটি’র কাজ শুরু করেন। অষ্টম শ্রেণী পাশ হলেও ড্রেসিং করা এবং ড্রিল করার কাজ চালিয়ে আসছিলেন। হাসপাতালের মালিক পাইক বাবু এসএসসি পাস হয়েও লোকাল এনেসথেসিয়া প্রদানে কাজ করেন।

পঙ্গু হাসপাতালে আসা নিরীহ রোগীদের হাসপাতালের গেট থেকেই ভুল বুঝিয়ে আশেপাশে গড়ে উঠা কয়েকটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ দালালচক্র। দালালরা প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে আনার বিনিময়ে জনপ্রতি পাঁচশ’ টাকা আয় করেন। এরপর হাসপাতালে যত বিল হয় তার শতকরা ৩০ ভাগ দেয়া হয় দালালদের।

এর আগে বিভিন্ন ক্লিনিকে ম্যানেজার ও পার্টনার থাকার পর সাত বছর আগে পাইক বাবু নিজেই ১০ বেডের হাসপাতালের মালিক হন। কয়েক মাস আগে বর্তমান ভবনে হাসপাতালটি স্থানান্তর করে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পঞ্চাশ শয্যার লাইসেন্স নেন। এমন হাসপাতালে ১৫ জন ডাক্তার ও ৩০ জন নার্স থাকা বাধ্যতামূলক হলেও কোনো নার্স পাওয়া যায়নি বলে জানায় র‌্যাব।