কেবল সুস্বাদুই নয়, আতার আছে হরেক উপকারিতা

SHARE

atart upokaritaগ্রীষ্মকাল মানেই মিষ্টি মধুর নানান ফল। তবে এবার গ্রীষ্মকাল আসার আগেই বাজার ভরে গেছে বিভিন্ন রসালো ফলে। আতাফল তার একটি। এই ফলের ভেতরে থাকে ছোট ছোট কোষ। প্রতিটি কোষের ভেতরে থাকে একটি করে বীজ। বীজকে ঘিরে থাকা নরম ও রসালো অংশটিকেই খেতে হয়।

আতাফলের আদি নিবাস পূর্ব আমেরিকা। বহু বছর আগে এ ফলটি পূর্ব আমেরিকা থেকে ভারতবর্ষে আসে। এখন পুরো উপমহাদেশে এই ফল দেখা যায়। আতাফল শরীফা এবং নোনা নামেও পরিচিত। তবে অঞ্চলভেদে কিছু পার্থক্য রয়েছে। আতাফলের রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রজাতি ও প্রকরণ। সবগুলিকেই ইংরেজিতে Custard-apple, Sugar-apple, Sugar-pineapple বা Sweetsop ডাকা হয়। আতাফলের বৈজ্ঞানিক নাম Anona squamosa Linn। আতাগাছ বহু শাখাবিশিষ্ট মাঝারি ধরনের বৃক্ষ। এটি প্রায় ১০-১৫ ফুট উঁচু হয়ে থাকে। সাধারণত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে গাছে ফুল আসে এবং মার্চে ফল আসে। ফল পাকে এপ্রিল-মে মাসে। কাঁচা ফল এবড়ো থেবড়ো গোলাকার, সবুজ বর্ণের। পাকলে সুগন্ধ ছড়ায় এবং স্বাদ মিষ্টি। ফল উপকারী হলেও এর বীজ বিষাক্ত।

আতাফলের প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছে –

খাদ্যশক্তি- ৮০-১০১ কিলোক্যালরি
জলীয় অংশ- ৬৮.৩-৮০.১ গ্রাম
আমিষ- ১.১৭-২.৪৭ গ্রাম
চর্বি- ০.৫-০.৬ গ্রাম
শর্করা- ২০-২৫.২ গ্রাম
খাদ্যআঁশ- ০.৯-৬.৬ গ্রাম
ক্যালসিয়াম- ১৭.৬-২৭ মিলিগ্রাম
ফসফরাস- ১৪.৭-৩২.১ মিলিগ্রাম
লৌহ- ০.৪২-১.১৪ মিলিগ্রাম
ক্যারোটিন- ০.০০৭-০.০১৮ মিলিগ্রাম
থায়ামিন- ০.০৭৫-০.১১৯ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লেভিন- ০.০৮৬-০.১৭৫ মিলিগ্রাম
নিয়াসিন- ০.৫২৮-১.১৯০ মিলিগ্রাম
অ্যাসকরবিক অ্যাসিড- ১৫.০-৪৪.৪ মিলিগ্রাম
নাইকোটিনিক অ্যাসিড- ০.৫ মিলিগ্রাম

আতাফলের স্বাস্থ্য উপকারিতা :

  • -আতা ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা একটি উন্নতমানের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফ্রি রেডিক্যাল নিয়ন্ত্রণে রক্ষা করে। এছাড়া ত্বকে বার্ধক্য বিলম্বিত করে।
  • -এতে উপস্থিত ভিটামিন এ চোখ, চুল ও ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
  • -আতা ফলের ম্যাগনেসিয়াম মাংসপেশির জড়তা দূর করে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  • -এর পটাশিয়াম ও ভিটামিন বি৬ রক্তের উচ্চচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
  • -এর খাদ্যআঁশ হজমশক্তি বৃদ্ধি করে ও পেটের সমস্যা দূর করে।
  • -আতাফলের খাদ্যউপাদান এনিমিয়া প্রতিরোধ করে।

আতাফলের ঔষধি গুণ :

  • -আতাগাছের শেকড়ের ছাল আমাশয়ের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  • -আতাফলের শাঁসের রস রক্তের শক্তি বৃদ্ধিকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  • -অপুষ্টিজনিত সমস্যায় আতাফলের রসের সাথে দুধ মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
  • -যে ফোঁড়া পাকেও না আবার বসেও না, এমন ফোঁড়ায় আতার বীজ বা পাতা বেটে সামান্য লবণ মিশিয়ে প্রলেপ দিলে ফোঁড়া পেকে পুঁজ বের হয়ে যায়।
  • -পাতার রস উকুননাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।