আমি কি করোনায় আক্রান্ত?

SHARE

আমি অনেকটা অসুস্থ্য, তবে মানুষিকভাবে অনেক শক্ত আছি। করোনার শুরু থেকেই প্রতিদিন বাহিরে যেতে হচ্ছে মানবিক কারনে। যুদ্ধ চলাকালীন সবাইতো আর ঘরে বসে থাকতে পারে না। যুদ্ধ করার জন্য সৈনিক প্রয়োজন। আমি তেমনই একজন যোদ্ধা। আপনজনরা সবসময় চায় আমি যেন বাহিরে না যাই। কিন্তু আমি সামাজিক সংগঠন ”পাথওয়ে” এর একজন পরিচালক। আমাদের নির্বাহী পরিচালক শাহীন ভাইয়ের সাথে আলোচনার মাধ্যমে প্রতিদিন ত্রাণ বিতরণ, লাশ দাফন, সাধারন মানুষদের হাসপাতালে আনা নেওয়াসহ বেশ কিছু কাজ করে আসছি। যার কারনে মানুষের সাথে ততোটা দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে যতোটা সম্ভব সাবধানতা অবলম্বন করে চলার চেষ্টা করি। কয়েকক দিন ধরে হালকা হালকা কাশি, গতকাল রাত থেকে গলা ব্যাথা, কিছুটা শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। তাই ৩৩৩ এ কল করার দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ডাক্তার এর সাথে কথা হলো। যেহেতু আমার বাসায় আমার নবজাতক সন্তান, তাই ডাক্তার সাহেব বললেন আপনার করোনা টেষ্টটা করে নেওয়াই ভালো। ডাক্তার সাহেব এর পরামর্শ অনুযায়ী ICDDRB গেলাম। করোনা টেষ্টের কথা শুনে সবাই ভয়ে দূরে চলে গেলো, বলে দিলো এখানে করোনা টেষ্ট হয় না। ICDDRB থেকে IEDCR গেলাম, তারা বললো গতকাল থেকে আমরা বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে করোনা টেষ্ট করা বন্ধ করে দিছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ব বিদ্যালয়ে টেষ্ট করা হয় সকাল ৮টা থেকে, তাও অসংখ্য ভিড়, নানা রেফারেন্স, নানা ধকল। তাহলে উপায় কি? ১০৬৫৫ এ কল করে পরামর্শ নিলাম, এক ডাক্তার ভদ্র মহিলা সুন্দর করে বললেন বাসায় গিয়ে আলাদা রুমে থাকেন, তিন বেলা নাপা খান, আর কিছুক্ষন পরপর কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খান। কোন উপায় পেয়ে বাসায় এসে তাই শুরু করলাম। ঘটনাটা লেখার একটাই কারন আমরা এই দেশের নাগরিক হয়ে আমরা আমাদের মৌলিক চাহিদার কতোটুকু পাচ্ছি? টেষ্ট কিটগুলো যদি মেডিসিনের দোকানে পাওয়া যেতো তাহলে আমরা নিজেদের টাকা দিয়ে কিনে টেষ্ট করে মনের সংশয়টুকু দূর করতে পারতাম। আর প্রতিদিন যেভাবে রোগী বাড়ছে, আর সরকার যে সব আত্বঘাতী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাতে দেশ এক ভয়াবহ মহামাীর দিকে ধাবিত হচ্ছে। তাই সরকারে কাছে আমাদের আকুল আবেদন, আপনারা দেশ পরিচালনায় সঠিক সিদ্ধান্ত নিন, সবার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন এবং আমাদের বাঁচার পরিবেশ তৈরি করান।

ইমারত হোসেন ইমু
সাংবাদিক