ইতালিতে মাফিয়ারাও এগিয়ে এসেছে ত্রাণ নিয়ে, বাড়ছে ভয়

SHARE

করোনায় বিধ্বস্ত ইউরোপের দেশ ইতালি। দেশটির প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ করোনা আক্রান্ত। মৃতের সংখ্যা ১৯ হাজার ছুঁই, ছুঁই। করোনার দাপটে কার্যত স্তব্ধ সেদেশের অর্থনীতি। কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ, সমাজের সবথেকে দরিদ্ররা অভুক্ত থাকছেন।

এই পরিস্থিতিতে চমকে দেওয়ার মতো দাবি করেছেন ইতালির মাফিয়া বিশেষজ্ঞ এবং লেখক রবার্তো স্যাভিয়ানো। তার দাবি, কঠিন সময়ে ইতালির গরিব মানুষের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে সেদেশের বিভিন্ন মাফিয়া গোষ্ঠীগুলো। খাবারের পাশাপাশি মানুষের কাছে দৈনন্দিন প্রয়োজনের জরুরি সামগ্রীও পৌঁছে দিচ্ছে মাফিয়া দলগুলো।

প্রাথমিকভাবে মাফিয়া গোষ্ঠীগুলোর এই কাজের পেছনে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে বলে মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মাফিয়া বিরোধী লেখক হিসেবে পরিচিত স্যাভিয়ানোর দাবি, এর পেছনে অন্য কৌশল রয়েছে মাফিয়া গোষ্ঠীগুলোর। বিপদের সময়ে গরিব মানুষের সহায় হয়ে আসলে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে গোটা ইতালিতে নিজেদের আধিপত্য আরো বাড়িয়ে নিতে চাইছে তারা। এমন কী, মাফিয়া গোষ্ঠীগুলোর নির্দেশে দক্ষিণ ইতালির রাজধানী নেপলসে সুদের কারবারিরা বিনা সুদে মানুষকে ঋণ দিচ্ছে বলেও দাবি করেছেন ওই মাফিয়া বিশেষজ্ঞ।

শুধু তাই নয়, আরো একটি বিষয় নিয়ে সতর্ক করেছেন ইতালির এই মাফিয়া বিশেষজ্ঞ। তার দাবি, অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের ধাক্কায় ইতালির বহু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানই বেসামাল। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলো থেকে সাহায্য না করলে খুব শিগগিরই টাকা ঢেলে এই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোও মাফিয়া সংগঠনগুলো নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেবে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রবার্তো।

ড্রাগ এবং অন্যান্য বেআইনি কারবারের টাকা কিভাবে বৈধ ব্যবসাতেও খাটায় ইতালির মাফিয়া সংগঠনগুলো, সে বিষয়ে যথেষ্ট অবগত এবং অভিজ্ঞ রবার্তো স্যাভিয়ানো। ইতালির মাফিয়া সাম্রাজ্য এবং তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে ‘গুমোরাহ’ নামে একটি বিখ্যাত বইয়ের লেখক এই স্যাভিয়ানো। পরে যার ওপর ভিত্তি করে সিনেমা এবং টিভি সিরিজও তৈরি হয়েছে।

স্যাভিয়ানো যখন এই দাবি করছেন, তখন উল্টো মতও ওঠে আসছে। জার্মানির একটি বিখ্যাত সংবাদপত্রে বৃহস্পতিবারই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, ইতালির দাবি মেনে জার্মানিসহ অন্যান্য দেশগুলো যদি অনিয়ন্ত্রিতভাবে ইতালিকে টাকা ধার দেয়, তাহলে তার একটা বড় অংশ ইতালির মাফিয়াদের হাতে চলে যেতে পারে। ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রী লুইগি দি মাইয়ো অবশ্য জার্মান সংবাদপত্রের ওই প্রতিবেদনের কড়া সমালোচনা করেছেন।