জুয়াই ছিল সম্রাটের নেশা, বললেন স্ত্রী

SHARE

র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগের আলোচিত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ‘জুয়ার প্রতি সম্রাটের ছিল প্রবল আসক্তি। জুয়ায় ডুবে থাকত সে। প্রতি মাসেই সে কয়েকবার সিঙ্গাপুর যেত জুয়া খেলতে।’

ক্যাসিনোর আয় সম্রাট দল পরিচালনার কাজে ব্যয় করত বলে জানান শারমিন। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ অভিযান আরো আগে পরিচালনা করলে দেশ ও জাতির অনেক উপকার হতো।’

শারমিন চৌধুরী গতকাল রবিবার বিকেলে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএসের ফ্ল্যাটে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা সম্রাট ও তাঁর সহযোগী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসভাপতি এনামুল হক আরমানকে রবিবার ভোর রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করার দাবি করে র‍্যাব। সম্রাটের বিরুদ্ধে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা, জুয়ার আসর পরিচালনা করা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে র‍্যাবের কাছে।

শারমিন চৌধুরী নিজেকে সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে বলেন, ‘আমাদের ১৯ বছরের সংসার। গত দুই বছর সে (সম্রাট) এ বাড়িতে আসত না। আমিই মাসে দু-তিনবার কাকরাইলে সম্রাটের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতাম। সেখানেই আমাদের কথা হতো।’

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানকে অভিনন্দন জানিয়ে শারমিন বলেন, ‘আমি দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে এ অভিযান পরিচালনার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। এ অভিযানটি আরো আগে পরিচালনা করলে দেশ ও সমাজের আরো অনেক উপকার হতো।’

আপনি ছাড়া সম্রাটের আর কতজন স্ত্রী আছে? এমন প্রশ্নের জবাবে শারমিন বলেন, ‘আমি তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। এর আগে তিনি আরো একজনকে বিয়ে করেন। তিনি বাড্ডায় থাকেন। তাঁর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে বলে আমি শুনেছি। এ ছাড়া সিঙ্গাপুরে মালয়েশিয়ায় জন্মগ্রহণকারী একজন চায়নিজ নারীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এ কারণেই সে গত দুই বছর আমাকে আর সিঙ্গাপুরে নেয় না, একাই যায়।’

একজন স্ত্রী হিসেবে আপনি তাঁকে আগে এ অপরাধ জগৎ থেকে ফিরিয়ে রাখেননি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শারমিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সে সব সময় আমার কাছে সব কথা বলত না। তাঁর ধারণা, আমি একটু বোকা টাইপের। আমি হয়তো সব কথা ফাঁস করে দেব বা অন্য কাউকে বলে দেব। এ জন্য সে সব সময় আমাকে সব কথা বলত না।’

সম্রাটের কোথায় কোথায় কী কী সম্পদ রয়েছে জানতে চাইলে শারমিন বলেন, ‘আমি দেখেছি তাঁর সম্পদ ও অথের্র প্রতি তেমন লোভ ছিল না। ক্যাসিনো চালিয়ে যে আয় হতো, তা দিয়ে সে তাঁর দল চালাত। এ জন্য দলে সে এতটা জনপ্রিয়। ঢাকায় তো আরো অনেক নেতা আছে। তাঁর মতো এত জনপ্রিয় আর কেউ কি আছে? ক্যাসিনো থেকে আয়ের টাকা পুরোটাই দলের জন্য ব্যয় করত সে।’

কাকরাইলের কার্যালয় যে ভবনে, সেটি কি তাঁর নিজের? এ প্রশ্নের জবাবে সম্রাটের এই স্ত্রী বলেন, ‘ভবনের একটি ফ্লোর সম্রাটের। এটি সম্রাটের কার্যালয় হওয়ার কারণে নিচে কর্মীরা মানুষকে তল্লাশি করে ঢুকতে দিত। এ কারণেই আস্তে আস্তে এ ভবনটিতে লোকজনের আসা-যাওয়া কমে যায়। একপর্যায়ে পুরো ভবনটি খালি হয়ে যায়।’