উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজকে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে?

SHARE

শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক মইনুল খান বলেছেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোহাম্মদ আলী একেকবার একেক রকম কথা বলছেন। তাই স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নিশ্চিত না হয়ে বলা যাবে না।”image_111568_0

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় মগবাজারে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত রাজধানীর ২৯/১ পুরানা পল্টনে ‘ঠিকানা’ নামের বাড়িতে জনৈক মোহাম্মদ আলীর দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়ান্দারা। অভিযানে তাদের সহায়তা করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অভিযান শেষে সেখান থেকে বিপুল পরিমান দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও সোনার বার উদ্ধার করা হয়।

মইনুল খান বলেন, “উদ্ধার হওয়া ৫২৮টি সোনার বারের মোট ওজন সাড়ে ৬১ কেজি। এগুলোর দাম প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এছাড়া দেশি বিদেশি মুদ্রার মধ্যে বাংলাদেশি সাড়ে চার কোটি টাকা এবং ১৫ লাখ সোদি রিয়াল আছে বলে আটক মো. আলী জানিয়েছেন।”

সংবাদ সম্মেলনে  মইনুল খান বলেন, “মুদ্রাগুলো এখনো গণনা করা হয়নি। এই জায়গাটিও গননার জন্য নিরাপদ নয়। তাই আমরা এগুলো গোয়ান্দা পুলিশের সদস্যরাসহ শাহজালাল রহ. আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যাব। স্বচ্ছতার জন্য সেখানে সিসি ক্যামেরার সামনে এগুলো গণনা করা হবে।”

আটক মো. আলী নিজেকে আলী সুইটস নামের একটি মিষ্টি দোকান ও সাফা হাউজিং নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানির মালিক বলে পরিচয় দিয়েছেন। তবে ওই ডেভেলপার কোম্পানী রিহ্যাবের সদস্য প্রতিষ্ঠান নয়।

তিনি জানান, পুরানা পল্টনের ওই বাসা থেকে সোনা চোরাচালানের ব্যবসা করা হয়, এমন সুনির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়।

অভিযান চলাকালে আটক মো. আলী জানান সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন সোনার বারগুলো তাকে রাখতে দিয়েছেন। এছাড়া দেশি-বিদেশি মুদ্রাগুলো তিনি নিজের বলে দাবি করেন।
image_111568_0
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মইনুল খান বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোহাম্মদ আলী একেকবার একেক কথা বলছেন। তাই স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নিশ্চিত না হয়ে বলা যাবে না।”

উপজেলা চেয়ারম্যানকে আপনারা বাঁচানোর চেষ্টা করছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রিয়াজ উদ্দিনের বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের হরিনা গ্রামে। জনতা ব্যাংকের ক্যাশিয়ার পদে তিনি চাকরি করতেন। সব শেষ মতিঝিল শাখা থেকে বদলি হয়ে বিমানবন্দর শাখায় কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি ওই চাকরিতে নেই।

এলাকায় কথিত আছে, রিয়াজ উদ্দিন হুন্ডি ব্যাবসা এবং সোনা চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত। গাজীপুর ও টঙ্গি এলাকায় তার পোশাক কারখানা আছে। নিজ গ্রামে বিশাল এলাকা নিয়ে তৈরি নান্দনিক বাড়িতেই তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করেন। গত ফেব্রুয়ারিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হন। নির্বাচনের আগে তিনি এলাকায় এতোটা পরিচিত ছিলেন না।

মইনুল খান জানান, এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ তিনটি ধারায় পৃথক মামলা হবে বলে।