তিস্তা বিষয়ে মনমোহনের চেয়ে মোদি এগিয়েছেন

SHARE

suronjit8আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, তিস্তার বিষয়ে মনমোহন সিংয়ের চেয়ে নরেন্দ্র মোদি একটু এগিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, একটা কিছু হলেও হয়ে যেতে পারে। ভারতীয় রাজনীতিতে ফেডারেশন আছে। অনেকগুলো রাজ্য নিয়েই তাদের এগিয়ে যেতে হয়। তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর বিষয়ে একটা ব্যবস্থা হবে।

রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে সোমবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু একাডেমি আয়োজিত চলমান রাজনীতি বিষয়ক এক আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন তিনি।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, তিস্তার বিষয়ে এখনও সমাধান হয়নি। সে ক্ষেত্রে ভারতীয় রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রীয় রাজনীতি আছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় মানে ফেডারেল পলিটিক্স। এটা আমাদের মতো নেশন, ওয়ান স্টেট-ইউনিটারি ফর্ম অব গভমেন্ট না। তাদের যেহেতু প্রচুর স্টেট রয়েছে, তাই স্টেটগুলোর স্বার্থও দেখতে হয়।

তাই তাদের এ যুক্তরাষ্ট্রীয় রাজনীতির বাধা অতিক্রম করেই যেতে হবে। মনমোহন সিংয়ের চেয়ে নরেন্দ্র মোদি কিছুটা এগিয়েছেন। তিনি মমতা ব্যানার্জীকে বাংলাদেশে নিয়ে আসতে পেরেছেন। আমি আশা করি তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বেড়াজাল মুক্ত হয়ে যাবে এবং তিস্তাসহ সমস্ত অভিন্ন নদীগুলো নিয়ে সমস্যার একটা সমাধান হবে।

সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে ভারত তাদের ঐকমত প্রকাশ করেছে। আমাদের দেশেও একটি ঐকমত্যের রাজনীতির প্রকাশ ঘটেছে। যারা ভারতবিরোধী রাজনীতি করছে তারাও ভুল-ত্রুটি বুঝে সীমান্ত চুক্তিসহ যে কয়টি চুক্তি হয়েছে তাতে ঐকমত প্রকাশ করেছে। এটা দু’দেশের জন্য বিশেষ করে আমাদের জন্য মাইলফলক।

তিনি বলেন, এতদিন আমরা যে অনৈক্যের রাজনীতি করেছি তাতে ক্ষতি ছাড়া লাভ হয়নি। এখন যদি আমাদের বোধ হয় যে জাতীয় স্বার্থে বৃহৎ প্রতিবেশীর সাথে আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক উন্নয়নের স্বার্থে ঐকমত হওয়া ছাড়া দ্বিমত হওয়ার সুযোগ নেই। নতুন রাজনীতির প্রাক্কালে বিএনপি প্রতিনিধি দলের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ভিন্ন ছিল। রাজনৈতিক ভাষাও অনেক সংযত ছিল।

সুরঞ্জিত বলেন, এটি যদি আমরা মনে করি বাংলাদেশ এবং ভারত বর্ষের বন্ধুত্ব তা নয়, এ অঞ্চলের সকল দেশগুলোর মধ্যেই উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার সম্ভাবনা বিরাজ করছে। দু’টি পোর্ট মংলা এবং চট্টগ্রামের মাধ্যমে বিশাল অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালু হবে। এ অর্থনীতি উন্নতি এবং উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় আরও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিয়ে যাবে।

প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নতুন বাতাবরণ সৃষ্টি হলো। সারা পৃথিবীর গণমাধ্যমে এ নিয়ে মুখর। এখন আর পশ্চিমে নয়, যত পারো পূবেও তাকাও। কারণ পূবই এখন সমৃদ্ধির চাবিকাঠি। আগামীতে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার পথ প্রশস্থ হয়েছে।

সুরঞ্জিত বলেন, অতীতের কোনো সরকার পারেনি নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও ভারতসহ সকলের সঙ্গে কানেকটিভিটি করতে। আমরা নেপাল এবং ভুটানের সাহায্যে জলবিদ্যুৎ তৈরি করতে পারব। সেটিতে অংশগ্রহণ করে বিশাল অংশের বিদ্যুৎ আমাদের দেশের অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করতে পারব। দীর্ঘকালীন বিদ্যুৎ সমাধানের জন্য এটি একটি পথ।

সংগঠনের উপদেষ্টা এমদাদুল হক সেলিমের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন—ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. সেলিম, সহ-সভাপতি ফয়েজ উদ্দিন মিয়া, সাম্যবাদী দলের নেতা হারুন চৌধুরী প্রমুখ।