টপঅর্ডারে ধ্বস স্বাগতিকদের

SHARE

pakiiতামিম-ইমরুল-মুমিনুল-মাহমুদুল্লাহ ফিরে গেছেন। স্বাগতিকদের টর্পঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যান ফিরে গেলে উইকেটে এসেছেন অধিনায়ক মুশফিক। সাকিবের সঙ্গে জুটি গড়ে দিনের বাকি ওভারগুলো পার করাই এখন বাংলাদেশের লক্ষ্য।

দলীয় ৪ রানের মাথায় তামিম আর ৩৮ রানের মাথায় মুমিনুল হককে হারালে উইকেটে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করছিলেন ইমরুল কায়েস এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এ দু’জন মিলে স্কোরবোর্ডে আরও ৩১ রান যোগ করেন। তবে, ইনিংসের ১৮তম ওভারে ইয়াসির শাহের বলে বোল্ড হন ব্যক্তিগত ৩২ রান করা ইমরুল।

এরপর ওয়াহাব রিয়াজের বলে আজহার আলির তালুবন্দি হন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ব্যক্তিগত ২৮ রান করে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৮৫ রান।

দ্বিতীয় দিনের চা-বিরতির পর আট উইকেট হারিয়ে ৫৫৭ তোলার পর নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। আর সফরকারীদের দেয়া রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমেই জুনায়ায়েদ খানের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন ওপেনার তামিম ইকবাল। আউট হওয়ার আগে গত টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান তামিম করেন মাত্র ৪ রান।

দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় ও শেষ সেশনে ব্যাট করতে নেমে তামিমের পর ফেরেন মুমিনুল হক। জুনায়েদ খানের বলে উইকেটের পেছনে সরফরাজের গ্লাভসবন্দি হন মুমিনুল। সাজঘরে ফেরার আগে মুমিনুলের ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান।

দ্বিতীয় সেশনে নেমে এ টেস্টে সফল হয়েছেন আজহার আলি এবং আসাদ শফিক। আজহারের টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল শতকের পর আসাদ শফিক টেস্টে শতক হাঁকান। আসাদ শফিক টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ শতক হাঁকিয়ে দলের সংগ্রহ বাড়াতে সাহায্য করেন।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। আর দুটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ শহীদ এবং শুভাগত হোম। সাকিব আল হাসান নেন একটি উইকেট।

টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা রান করে ডাবল সেঞ্চুরি করা আজহারকে নিজের আগের ওভারে বিদায় করেন শুভাগত হোম। মাহমুদুল্লাহর তালুবন্দি হয়ে ফেরত যাওয়ার আগে আজহার ৪২৮ বল মোকাবেলা করে ২২৬ রানের দৃষ্টিনন্দন একটি ইনিংস খেলেন। শফিককে সঙ্গে নিয়ে ২০৭ রানের জুটিও গড়েন আজহার।

৪১ টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামা আজহার সাকিববে ছক্কা মেরে নিজের ৪০৬তম বলে ডাবল শতকে পৌঁছান। আর শফিক ১৪৯ বলে ষষ্ঠ শতক হাঁকান।

ডাবল শতক হাঁকানো আজহার আলির পর শতক হাঁকানো আসাদ শফিককে বিদায় করেন শুভাগত হোম। মাহমুদুল্লাহর তালুবন্দি হয়ে ফেরেন এ দুই ব্যাটসম্যান। আউট হওয়ার আগে শফিক করেন ১০৭ রান।

আজহার আলি আর আসাদ শফিক ফিরে যাওয়ার পর ফেরেন ওয়াহাব রিয়াজ। তাকে সাজঘরে ফেরত পাঠান গত টেস্টের ৬ উইকেট নেওয়া স্পিনার তাইজুল ইসলাম। এরপর একই ওভারে ইয়াসির শাহকে এলবি’র ফাঁদে ফেলেন তাইজুল।

এর আগে দলীয় ৩২৩ রানে ব্যাটিং শুরু করা পাকিস্তান স্কোরবোর্ডে আর কোনো রান যোগ না করতেই দলপতির উইকেট হারায়। প্রথম সেশনের দ্বিতীয় ওভারে কোনো রান না করতেই সাকিবের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হন মিসবাহ (৯ রান)। মোহাম্মদ শহীদের আগের ওভারে (দিনের শুরুর ওভার) কোনো রানই তুলতে পারে নি পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা।

দ্বিতীয় দিন দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে ঘূর্ণি জাদুতে মিসবাহ উল হককে বোল্ড করে দুর্দান্ত সূচনা করেন সাকিব আল হাসান। গ্যালারিভর্তি দর্শকরা আশায় বুধ বাঁধেন দিনটা হয়তো হতে যাচ্ছে টাইগারদের। কিন্তু পেস তারকা শাহাদাত হোসেনের অনুপস্থিতি ও স্পেশালিস্ট বোলারের স্বল্পতা দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয় টাইগার অধিনায়ক মুশফিককে।

এর আগে প্রথম দিন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ইউনিস খান ও আজহার আলি তালুবন্দি হয়েও নো বলের কল্যাণে প্রাণ ফিরে পান। প্রথম টেস্টে জীবন পাওয়া দুই পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানই সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান দলকে।

প্রথম দিন শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় তিন ইউকেট হারিয়ে ৩২৩ রান। আজহার ১২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। এই সেঞ্চুরিয়ানকে সঙ্গ দিয়ে দ্বিতীয় দিন ব্যাট হাতে নামেন ৯ রান করা মিসবাহ উল হক।

টেস্টের প্রথম দিন দলীয় ৫৮ রানের মধ্যে দুই ওপেনার আউট হলেও ইউনিস খান ও আজহার আলীর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের ২৫০ রানের পার্টনারশিপে ভর করে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় সফরকারীরা।

ইউনিস ১৪২ বল মোকাবেলায় ৯টি চার ও এক ছক্কায় টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৯তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। অন্যদিকে, ১০টি চারের সাহায্যে আজহারের শতকটি আসে ২১২ বল থেকে।

ইনিংসের ২৩তম ওভারে এবং পাকিস্তানের দলীয় ৫৮ রানের মাথায় দুই উইকেট পড়ে গেলেও আর উইকেটের দেখা মিলছিল না স্বাগতিক বোলারদের। তবে, ইনিংসের ৮৫তম ওভারে মোহাম্মদ শহীদের বলে শুভাগত হোমের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরত যান ১৪৮ রান করা ইউনিস। আউট হওয়ার আগে তিনি ১৯৫ বল মোকাবেলা করে তিনটি ছয়ের পাশাপাশি ১১টি চার হাঁকান।