প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীন প্রসঙ্গ আসেনি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

SHARE

বাংলাদেশের তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প নিয়ে চীন ও ভারতের মধ্যে টানাপড়েন চলছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের দিল্লি সফরে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীন বিষয়ে কোনো আলোচনা না হওয়ার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

দিল্লি সফর শেষে আজ রোববার (২৩ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমনটাই জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত সফরটি অত্যন্ত চমৎকার, ফলপ্রসূ ও আন্তরিকতাপূর্ণ ছিল। তিস্তা নদী নিয়ে বা আমাদের যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের ৫৪টি যৌথ নদী রয়েছে, সেই যৌথ নদীর যদি একটা অভিন্ন ব্যবস্থাপনা করতে পারি সেটি দুদেশকে উপকৃত করবে। সে নিয়ে আমরা আলোচনা উপস্থাপন করেছি।

তিনি বলেন, তিস্তা নদী ও চীনের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা ভারতের সহায়তা চেয়েছি। তখন চীন প্রসঙ্গ এসেছে। যেখানে জাতিগত যে সংঘাত চলছে সেই প্রসঙ্গে চীনের কথা এসেছে।

সম্প্রতি দিল্লিতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফর করেন শেখ হাসিনা। ভারতে নতুন সরকার গঠনের পর দেশটিতে এটি প্রথম কোনো বিদেশি প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় সফর ছিল এটি। সরকার প্রধানের সফরের দ্বিতীয় দিন গতকাল শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন শেখ হাসিনা। সেই বৈঠকে তিস্তা প্রসঙ্গ ছিল। তবে দিল্লির পক্ষ থেকে তিস্তা জট খোলা নিয়ে কোনো সুখবর ছিল না।

তিস্তা প্রসঙ্গে মোদি বলেছেন, তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য দ্রুত একটি কারিগরি দল বাংলাদেশে যাবে।

ভারতীয় কারিগরি দল আসার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিস্তা এটা বড় প্রকল্প। সেটার জন্য তো কারিগরি দল আসতেই হবে। কারিগর দল আসা মানে এটা খুব ইতিবাচক।

বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ করে মেডিকেল ই-ভিসা চালুর ঘোষণা দিয়েছে ভারত। কবে নাগাদ এটি চালু হবে-জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ই-ভিসা চালুর কথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন। বিশেষ করে মেডিকেল ভিসার ক্ষেত্রে এবং অন্যান্য ভিসাও যেন সহজীকরণ হয়, এ নিয়ে তারা একটি প্যাকেজ নিয়ে এগোচ্ছে। দিনক্ষণ বলার মতো কর্তৃপক্ষ আমি নই। এটা ভারতীয় হাইকমিশন বা ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।

প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক যুক্ত হওয়ার খবর এসেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী এখনই কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউর রহমানকে। তাকে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক পিএলসির পরিচালক পদ থেকে অপসারণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, পত্রপত্রিকায় যেভাবে খবরটি এসেছে, সেটি সত্যি অনভিপ্রেত এবং এটি যদি সত্য হয় তাহলে দুঃখজনক। আমি ইতোমধ্যে এনবিআরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি, তাকে এনবিআরের সদস্যপদ থেকে ইতোমধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, তাকে (মতিউর) সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকে সরানোর জন্য ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তদন্ত হবে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উত্থাপন হয়েছে, সেগুলো সত্য কিনা তা তদন্তের পর বেরিয়ে আসবে। তারপর নিশ্চই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ দুর্নীতির মাধ্যমে এভাবে সম্পদ অর্জন করা কখনও সমীচীন নয়। আমাদের সরকার সবসময় দুর্নীতি দমনে জিরো টলারেন্স এবং সে কারণে এ সরকারের আমলে নানা দুর্নীতির ঘটনাগুলো উঠে আসছে।