ক্ষমতা কোনো ভোগের বস্তু নয় : প্রধানমন্ত্রী

SHARE

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ক্ষমতা কোনো ভোগের বস্তু নয় কোনো রাজনৈতিক নেতার জন্য। ক্ষমতা হচ্ছে জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালন করার মাধ্যম।

সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মদিন উপলক্ষে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষকে দিতে জানে, মানুষের পাশে দাঁড়াতে জানে। আওয়ামী লীগ যখন মানুষকে ইফতার বিতরণ করছে, তখন যারা প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়, উৎখাত করতে চায়, অগ্নিসন্ত্রাস করে তারা মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে নিজেরা ইফতার পার্টি করছে। আর সেই ইফতার পার্টিতে যেয়েও তারা আল্লাহ-রাসূলের নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গীবত গায়। কবে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করবে সেই পরিকল্পনা করে। কিন্তু তারা কিভাবে ভুলে যায় যে, আওয়ামী লীগ তো মানুষের পাশে আছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যে মানুষগুলো ছিল নির্যাতিত নীপিড়িত, দারিদ্র ক্ষুধার্থ মানুষ সেই মানুষগুলোর ভাগ্য পরিবর্তন করাই ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একমাত্র সাধনা, একমাত্র লক্ষ্য। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য। তিনি সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন বাঙালিদের জন্য।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতির পিতা শৈশব থেকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করতেন। তিনি বড় মানুষ হবেন তা ছোটবেলায় তাঁর বিভিন্ন কাজের মাঝেই ফুটে ওঠে। শেখ মুজিবুর রহমানের বাবা-মা শৈশব থেকেই তাঁকে রাজনীতিতে যেভাবে সমর্থন দিয়েছেন তাও ছিল বিরল ঘটনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর একটা বিশ্বাস সবসময় ছিল যে বাঙালিরা তাকে কখনো মারবে না। অনেকেই তাকে সাবধান করেছেন। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেননি। বলেছেন, ‘না ওরা তো আমার ছেলের মতো। আমাকে কেন মারবে।’ বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে এতো গভীরভাবে ভালোবেসেছিলেন যে, এ দেশের কোনো মানুষ তার গায়ে হাত দেবে, তাকে হত্যা করবে তিনি ভাবতে পারেননি। কিন্তু আমরা দেখলাম, যারা আমাদের বাড়িতে প্রতিনিয়ত এসেছে, আমার মায়ের হাতের খাবার খেয়েছে। ১৫ আগস্ট তারাই ঘাতক হিসেবে হত্যাকাণ্ড চালালো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রিটিশ আমলে দুর্ভিক্ষ লেগেই থাকত। দুর্ভিক্ষের সময় সেই ছোট্ট খোকা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) তার বাবার ধানের গোলা খুলে দিয়ে গরিব মানুষকে সাহায্য করেছে। এভাবেই ছোটোবেলা থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে মানুষের প্রতি দরদ ও কর্তব্যবোধ জেগে উঠে। আমার দাদা-দাদি তার খোকাকে যেভাবে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে উৎসাহিত করেছেন, সেটিও বিরল ঘটনা।

তিনি বলেন, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট এবং তার লেখা বইগুলো নেতাকর্মীদের পড়া উচিত। তিনি অত্যন্ত সাদাসিদে জীবন-যাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা যেন নষ্ট না হয় তার জন্য শোক ব্যথা বুকে নিয়েও মানুষের পাশি আছি।

বিএনপি ইফতার পার্টি খায় আর আওয়ামী লীগের গিবত গায় বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি আহ্বান করেছিলাম, কোনো ইফতার পার্টি নয়। আমরা সাধারণ মানুষের মধ্যে ইফতার বিতরণ করব। আমি ধন্যবাদ জানাই, আমাদের নেতাকর্মীদের তারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে৷ সেই কোভিড ১৯ এর মতো। সারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও সহযাগী সংগঠন, ইফতার বিলি করছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি) কাউকে ইফতার দেয় না। ইফতার পার্টি খায়। আল্লাহ রাসুলের নাম নিয়ে ইফতার পার্টি খায় আর আওয়ামী লীগের গিবত গায়।

সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগের অপরাধ কী? এই দেশ স্বাধীন করেছে, গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এটা অপরাধ? দেশটাকে উন্নত করছে এটা অপরাধ?

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এক সময় দেশের মানুষ ‘ভাতের ভ্যান’ ভাতের মার খেত। লবণ দিয়ে ভাতের মাড় খেতেও মানুষকে হিমশিম খেতে হতো। কিন্তু আওয়ামী লীগের আমলে ভাতের কষ্ট মানুষের নাই।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জি. মোশাররফ হোসেন, অ্যাড. কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ডা. দীপু মণি, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।