ডলার সংকটে বাড়তি প্রণোদনা : আশা জাগাচ্ছে রেমিট্যান্স

SHARE

তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়ে দেশে ডলারের বাজারে অস্থিরতা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। বেঁধে দেওয়া দামে ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারগুলোতে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষত, খোলাবাজারে ডলারের দাম অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। খোলাবাজারে ডলারের নিয়ন্ত্রণ এখন কালোবাজারিদের দখলে।
সবশেষ গত বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) খোলাবাজারে প্রতি ডলার ১২৭ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এরপরও ক্রেতারা চাহিদা মতো ডলার পাচ্ছেন না। গত বেশ কদিন ধরেই প্রতি ডলার লেনদেন চলছে ১২৪ টাকা পর্যন্ত।
ডলার সংকটে আমদানির দেনা পরিশোধ করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহ করা হচ্ছে। গত সপ্তাহেই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, রিজার্ভ থেকে আর কোনো ডলার বিক্রি করা হবে না। এ অবস্থায় ডলার সংকট নিরসনে সরকারের কোনো উদ্যোগই যেন কাজে আসছে না। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ১২ থেকে ১৪ টাকা বাড়তি দামে প্রবাসী আয় কিনছে ব্যাংকগুলো। ফলে সংকটময় পরিস্থিতিতে বাড়তে শুরু করেছে ডলার আয়ের অন্যতম উৎস রেমিট্যান্স।
চলতি নভেম্বরের প্রথম ১০ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ পথে ও ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৭৯ কোটি ৪৪ হাজার ডলার। এতে দৈনিক আসছে ৭ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
রোববার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম ১০ দিনে আসা ৭৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্সের মধ্যে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪ কোটি ৯২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত এক ব্যাংকের (বিকেবি) মাধ্যমে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭২ কোটি ৩২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এসময়ের মধ্যে ১০টি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২০ সালে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা দুই হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা কোনো একটি অর্থবছরে এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।
রেমিট্যান্সের প্রতি ডলারে ১১৫ টাকার বেশি নয়: রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের বিপরীতে ১২২ টাকার বেশি দাম দেওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে আসার পরই জরুরি বৈঠকে বসে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদা। গত বুধবার (৮ নভেম্বর) যৌথ বৈঠকে নতুন সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠন দুটি। সিদ্ধান্ত মোতাবেক, এখন থেকে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দাম কোনোভাবেই ১১৫ টাকার বেশি দেওয়া যাবে না।