ম্যাক্সওয়েল নামলেই নারিনকে আনুক গম্ভীর

SHARE

সোজাসুজি বলে ফেলা যাক, আমার কাছে কাল মঙ্গলবার ইডেনে কিংস ইলেভেন ম্যাচটাই কেকেআরের কাছে ফাইনাল৷ টানা সাতটা ম্যাচ জিতেছে কেকেআর৷ এখন মোমেন্টামটা ধরে রাখাটাই আসল পরীক্ষা৷ টানা জিতে আসতে আসতে একটা ম্যাচ পিছলে গেলে কিন্ত্ত মোমেন্টাম বা ছন্দটা ধাক্কা খাবে৷ সেটা রাখতে পারাটাই কেকেআরের চ্যালেঞ্জ৷

পাঞ্জাব ম্যাচ জিততে হলে কী কী করা দরকার, তার একটা রূপরেখা তৈরি করার চেষ্টা করা যাক৷image_83462_0

১. তিন স্পিনারের ছক: প্রথমেই বলে রাখি, নারিন-সাকিবের সঙ্গে তিন নম্বর স্পিনার হিসেবে ফিরিয়ে আনা দরকার পীযূষ চাওলাকে৷ বিনয় কুমারের জায়গায় পাঞ্জাব ম্যাচে নাইটদের বাজি হতে পারে চাওলা৷ লেগ স্পিনার হিসেবে উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা আছে, ইডেনে এ বার যা উইকেট হয়েছে, ১২৫ বা ১৩০ কিলোমিটারের বিনয় কুমারের চেয়ে একটা লেগ স্পিনার কাজে লাগবে গম্ভীরের৷ আগের দিনই দেখা গিয়েছে, বিনয় বা উমেশকে যথেচ্ছ মেরেছে সানরাইজার্স ব্যাটসম্যানরা৷ এদের দু’জনের মধ্যে এক জনকে বসতে হবে৷ উমেশকেও বসানো যেতে পারে, কারণ বিনয়ের ব্যাটের হাত ওর চেয়ে ভালো৷

২. টস জিতে ব্যাটিং: কিংস ইলেভেন টিমটা এমন, ভালো উইকেট পেলে ২২০-ও অনায়সে তাড়া করতে পারে৷ সেই ক্ষমতা ওদের ব্যাটসম্যানদের আছে৷ সে জন্য টস জিতলে নাইটদের খোলা মনে ব্যাটটা করে নেওয়া উচিত৷ এবং ১৬০ বা ১৭০ লক্ষ্য রেখে ইনিংসটা গড়া উচিত৷ তারপর তো ইউসুফ বা সাকিবদের ব্যাটে রান এসে অতিরিক্ত ১৫ বা ২০ যোগ হতেই পারে৷ মোট কথা, পাওয়ার প্লে-তে ভালো শুরু, প্রথম ১৫ ওভারে দুটো বা তিনটের বেশি উইকেট না হারানো আর ভদ্রস্থ একটা রান রেট রেখে যাওয়া৷ এটুকু করতে পারলেই কাজ হবে৷

৩. ম্যাক্সওয়েল-মিলারকে আটকানো: মনে রাখা দরকার এর আগে নাইটদের বিরুদ্ধে দুটো ম্যাচেই কিন্ত্ত রান পায়নি ম্যাক্সওয়েল৷ কাজেই ওর মধ্যে খিদেটা থাকবে৷ প্লাস নারিনকে খেলার চ্যালেঞ্জ৷ ম্যাক্সওয়েল-মিলার জুটি একবার দাঁড়িয়ে গেলে হাসতে হাসতে ম্যাচ নিয়ে যায়৷ সেখানে অবশ্যই গম্ভীরের অস্ত্র নারিন৷ ইডেনের উইকেটে ওকে মারা পৃথিবীর কঠিনতম কাজগুলোর একটা৷ ওকে বুদ্ধি করে ব্যবহার করছে গম্ভীর৷ প্রয়োজনে ম্যাক্সওয়েল ক্রিজে এলেই নারিনকে আনা দরকার৷ যাতে ওর ওই শুরু থেকেই চালাব, ছন্দটা নষ্ট করে দেওয়া যায়৷

৪. মর্কেলের চার ওভার: নতুন বলে ১৪৫ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বলটা করছে মর্কেল৷ বরং পরের দিকে বল করতে এলে মার খেয়ে যাচ্ছে৷ পাওয়ার প্লে-তে তিন ওভার দিয়ে ফেলে না রেখে প্রয়োজনে টানা চারটে ওভার করানো যেতে পারে৷ তাতে ফাউ হিসেবে দুটো উইকেট চলে আসতে পারে৷ ডেথ-এর জন্য ওকে ফেলে রেখে লাভ নেই৷

৫. উত্থাপ্পা ফ্যাক্টর: রোজই রান করে দিচ্ছে, প্লে অফেও নাইটদের ভালো শুরুর জন্য ওর দিকেই তাকাতে হবে৷ কিন্ত্ত এখানেই ভয় থাকছে৷ কোনও এক দিন ল অফ অ্যাভারেজ ওকে আগে ফেরাতে পারে৷ এটা মাথায় রাখতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে৷ সে ক্ষেত্রে গম্ভীর বা মণীশকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে৷ প্রত্যেক ক্রিকেটারের জীবনেই একটা সোনার সময় আসে৷ উত্থাপ্পা এখন সেই সময়টার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে৷ আর দুটো ম্যাচ এই ফর্মে খেলতে পারলে পরেরবার দর পাওয়া নিয়ে ভাবতে হবে না৷ আবার বলছি, এ বার নাইটদের সাফল্যের পিছনে উত্থাপ্পা আর নারিনের অবদানই সবচেয়ে বেশি৷ আশা করা যাক, কিংস ইলেভেন বোলিং নিয়েও ছিনিমিনি খেলবে রবিন৷

৬. ইডেনের সমর্থন: এই যে তিন থেকে দুইয়ে উঠে আসা, এটা যে কোনও টিমকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগায়৷ টিমের মনে হয়, আমাদের পক্ষে সব সম্ভব৷ এই ফর্ম্যাটে টানা সাতটা ম্যাচ জেতা কম কথা নয়৷ ইডেনে কেকেআরের জন্য সমর্থনটাও খুবই স্বতঃস্ফূর্ত৷ একটা সিটও ফাঁকা পড়ে থাকছে না৷ শাহরুখ খান একটা ম্যাচেও আসেনি৷ তাতে কিন্ত্ত ইডেনের সমর্থনে কোথাও ভাটা পড়েনি৷ এটা কম কথা নয়৷ যখন বাংলা বা কলকাতার কোনও মুখ কেকেআরে নেই৷

২০১২ সালে যে টিমটা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, তারাও শেষ দিকে টানা জিতেছিল৷ কারণ ওই মোমেন্টাম৷ যেটা এই কেকেআরের মধ্যে ভীষণ ভাবে ঢুকে পড়েছে৷ তাই জন্যই ওদের অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছে৷