মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণেই জেসমিনের মৃত্যু : চিকিৎসক

SHARE

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে নওগাঁয় র‌্যাবের হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে এমনটি এসেছে বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. কফিল উদ্দিন।
আজ সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে ইনজুরির (আঘাত) কথা উল্লেখ করেছি। ইনজুরি (আঘাত) আছে। কিন্তু সেই ইনজুরি মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট না। মৃত্যুর কারণ হচ্ছে ‘শক’। ‘শক’টা হয়েছে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে ব্রেনের ভেতরে রক্তের প্রণালি একদিকে ফেটে গেছে। এটি এক জায়গায় নয়, দুই জায়গায় ফেটে গিয়ে ওখানে হেমোরেজ (মস্তিষ্কের অভ্যন্তরীণ এক ধরনের রক্তক্ষরণ) হয়েছে। হেমোরেজ হয়েই ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের কপালে জখমের বিষয়ে ডা. কফিল উদ্দিন বলেন, মস্তিষ্কে এই রকমের ঘটনার (হেমোরেজ) কারণে সে পড়ে যেতে পারে। এছাড়া অন্য কোনোভাবে হতে পারে। আমি প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম না। আমি বলতে পারব না। তবে কপালে ছোট্ট একটা জখম আমরা পেয়েছি। যার আকার ২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। এ ছাড়া ডান হাতের কনুইয়ের ভেতর দিকে একটি ফোলা জখম ছিল। যেটার সাইজ ২ সেন্টিমিটার। এটা সাধারণত চিকিৎসা গ্রহণের জন্য রোগীর হাতে ক্যানোলা করার সময় হয়। এই যে দুটি ইনজুরি রয়েছে তা মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট নয়। তার মৃত্যু হয়েছে ‘শক’ থেকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে।
তিনি আরও জানান, সুলতানা জেসমিনের মরদেহের ময়নাতদন্তের সময় উপস্থিত ছিলেন, ফরেনসিক বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. তাজনীন জাহান, বিভাগীয় প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন আরেক প্রভাষক জামান নিশাত রায়হান। পরে জেসমিনের মরদেহ তারা একসঙ্গে দেখেন। এরপর তিনজনের সমন্বয়ে বোর্ড গঠন করে ময়নাতদন্ত করা হয়।
এর আগে গতকাল দুই এপ্রিল নিহত সুলতানা জেসমিনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে রামেক ফরেনসিক বিভাগ।
সুলতানা জেসমিনকে গত ২২ মার্চ সকালে অফিসে যাওয়ার পথে শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে আটক করে র‌্যাব। ওই দিন দুপুর ১২টার পর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন সুলতানা নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ মার্চ সকালে তিনি মারা যান। পরের দিন ২৫ মার্চ রামেকে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে নওগাঁ সরকারি কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।