ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্রের আরও ২০০ ব্যাংক

SHARE

যেসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিবি) গুটিয়ে নেয়া হয়েছে সেসব কারণে এবার আরও প্রায় ২০০টি ব্যাংক ঝুঁকিতে রয়েছে। দেশটির অন্তত ১৮৬টি ব্যাংকের গ্রাহক যদি তাদের আমানত হঠাৎ তুলে নেয়া শুরু করে তাহলে এসব ব্যাংকের অবস্থা টালমাটাল হতে যারে। এমনকি ব্যাংকগুলোর পতন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা নেটওয়ার্ক ফাউন্ডের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকে যাদের ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার বা তারও কম রয়েছে, সেসব গ্রাহকদের নগদ অর্থ পেতে সমস্যা হতে পারে। সপ্তাহখানেক আগেই এ সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল এসভিবি।
উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, এসব ব্যাংক তাদের সম্পদের বড় একটি অংশ সুদনির্ভর মূল্য সংবেদনশীল উপকরণ যেমন সরকারি বন্ড ও বন্ধকী সিকিউরিটিজের ওপর নির্ভরশীল। গত এক বছরে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার বাড়িয়ে দেয়ায় পুরনো ও কম সুদের বিনিয়োগ মূল্য তীব্রভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক এসভিবিও তাদের মূলধন দীর্ঘমেয়াদি সরকারি বন্ড আকারে রেখেছিল। যা প্রাথমিকভাবে নিরাপদ হিসেবে মনে করা হতো। এসভিবি যখন বন্ডগুলো কেনে তখন এগুলোর মূল্য খুব বেশি ছিল না, কারণ সুদের হার তখন থেকে বেড়েছে। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী মেয়াদ পূরণের আগেই তাদের আমানত ফেরত দেয়ার জন্য সেসব বন্ডগুলোর মধ্যে কিছু বিক্রি করতে হয়েছিল। ফলে প্রায় দুই বিলিয়ন ক্ষতি হয়।
এসভিবি যখন ক্ষতির বিষয়টি জানায় তখন ব্যাংকটির শেয়ারে দরপতন শুরু হয়। একসময় এ ব্যাংকটি প্রযুক্তি খাতের চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত ছিল। কিন্তু যখন ক্ষতির ঘোষণা জানায় এবং ওয়াল স্ট্রিট থেকে অতিরিক্ত অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা প্রকাশ করে তখনই উদ্বেগ ছড়ায় যে—দেউলিয়া হতে পারে ব্যাংকটি।
এতে ব্যাংকটির শেয়ার মূল্য ক্রমশ কমতে থাকে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ফলে এসভিবিসহ অন্যান্য ব্যাংকগুলোরও আমানত তুলে নেয়ার হিড়িক পড়ে।
এমন অবস্থায় ফেডারেল সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে তারা সব আমানতকারীর অর্থ রক্ষা করবে। এছাড়া গ্রাহকদের মধ্য থেকে অঅতঙ্ক দূর করতে আড়াই লাখ ডলারের বেশি যাদের আমানত ছিল তাদেরও অর্থ ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও আশ্বস্ত হতে পারেননি গ্রাহকরা। তারা এসভিবি সমমানের ব্যাংকগুলো থেকে তাদের অর্থ তুলেই নিচ্ছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গ্রাহকরা যদি এভাবে তাদের অর্থ ফিরিয়ে নিতে থাকে তাহলে এসভিবির মতো অন্যান্য সব ব্যাংকও একই পরিস্থিতির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাংকগুলোর সম্পদের আর্থিক রিপোর্ট পর্যালোচনারভিত্তিতে সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোর বাজারমূল্য আনুমানিক দুই ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছে।