জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল : র‌্যাব ডিজি

SHARE

র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বুকে রোল মডেল। জঙ্গি দমনে জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে র‌্যাব ফোর্সেস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আব্দুর রহমান, সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই ও খালেদ সাইফুল্লাহ ওরফে ফারুকসহ নেতৃস্থানীয় পর্যায়ের জঙ্গি নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার (১৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র‌্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত দরবারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এসব কথা বলেন র‌্যাব ডিজি। সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বিরুদ্ধে যদি অভিযান পরিচালনা করা না হতো তাহলে হলি আর্টিজানের চেয়েও বড় ধরনের কোনো নাশকতা হতে পারত। তিনি বলেন, যখনই জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়েছে তখনই অভিযান পরিচালনা করে জঙ্গিদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে র‌্যাব।
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র‌্যাব জঙ্গি, জলদস্যু, মাদক, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, চাঞ্চল্যকর মামলার আসামি গ্রেপ্তারসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
প্রধানমন্ত্রীরে প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে র‌্যাব ডিজি বলেন, আপনার মহানুভবতায় র‌্যাব ফোর্সেস স্থল, আকাশ ও নৌপথে একটি শক্তিশালী ও সক্ষম ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহলের জঙ্গিবাদের বীজ বপনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত করার অপচেষ্টাকে রুখে দিয়েছে র‌্যাব। সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চরমপন্থিদেরও রুখে দিয়েছে। গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, দেশের শান্তি বিনষ্ট করতে স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র সহিংসতা পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের কিছু সদস্যকে একীভূত করে ২০১৯ সালে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামের নতুন জঙ্গি সংগঠন তৈরি করে। এই সংগঠনের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছিল। এই সংগঠনের সদস্যরা কেএনএফ কর্তৃক প্রশিক্ষণ নিয়ে পরবর্তীতে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল। আমরা এই নতুন জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে শতাধিক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি।
তিনি বলেন, এই নতুন জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে যদি অভিযান পরিচালনা করা না হতো তাহলে হলি আর্টিজানের চেয়েও বড় ধরনের কোনো নাশকতা হতে পারত। যখনই জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়েছে তখন অভিযান পরিচালনা করে তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে র‌্যাব।
মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে র‌্যাব দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসছে উল্লেখ করে এ অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, অনেক বড় বড় অভিযান পরিচালনা করে ইয়াবার অনেক বড় চালান জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে। যুবসমাজকে মাদকের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এবং জিরো টলারেন্স নীতির আলোকে র‌্যাব দেশকে মাদকমুক্ত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, সুন্দরবনকে জলদস্যু মুক্ত করতে র‌্যাবের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩২৮ জন আত্মসমর্পিত জলদস্যুকে পুনর্বাসন করতে আপনার (প্রধানমন্ত্রী) অনুদান ও জনসম্পৃক্ততা গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। যে কারণে সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে।
র‌্যাব ডিজি বলেন, জলদস্যুমুক্ত সুন্দরবনের জন্য র‌্যাবের ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সাফল্যগাঁধা জনসাধারণের সামনে তুলে ধরার জন্য ‘অপারেশন সুন্দরবন’ নামের চলচ্চিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই চলচ্চিত্র থেকে আয়ের লভ্যাংশ আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুদের পুনর্বাসনে ব্যয় করা হচ্ছে। সিলেটে ভয়াবহ বন্যা, শৈত্যপ্রবাহসহ যেকোনো জাতীয় দুর্যোগে ফাস্ট রেস্পন্ড বাহিনী হিসেবে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে র‌্যাব। এই বাহিনী যেকোনো দুর্যোগে সহায়তা প্রদানে সদা প্রস্তুত।
অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে র‌্যাব এখন অনেক বেশি স্মার্ট, সুসংহত, আত্মপ্রত্যয়ী, দৃঢ় ও অপরাধ দমনে মূল কারিগর বাহিনীতে পরিণত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।